মুরগির শেড নির্মাণ ও জীবাণুমুক্তকরণ,ধারাবাহিকভাবে(বিস্তারিত)
কমার্শিয়াল ১টা ফার্ম থাকে আরেকটা ফার্ম ২০০মিটার মানে ৫০০ফুট দূরে হবে।
১সেড থেকে আরেক সেড প্রস্থ্যের দ্বিগুণ দূরে করতে হবে।
ব্রিডার ফার্ম ১টা থেকে আরেকটা ৫কিলোমিটার দূরে করতে হবে।লোকালয় থেকে দূরে হবে।
১.মুরগির ঘর:
# পূর্ব-পশ্চিম লম্বা হবে যাতে অবাধ বায়ু চলাচল করতে পারে এবং সরাসরি যাতে সূর্যের আলো না পড়ে।
#সরাসরি সূর্যের আলো প্রবেশ করা ঠিক না কারণ এতে গরমকালে স্টোক করে মুরগি মারা যায় তাছাড়া খাবারের মান নষ্ট হয়।
খাচায় ১ হাজার লেয়ার মুরগি ২ টা পিরামিড হলে
#প্রস্থ: ২৪-২৫ ফুট, উচ্চতা ৮-১০ফূট
১টা পিরামিড হলে প্রস্থ ১২-১৩ ফুট দেয়া যায়।
এবং দৈর্ঘ্য চাহিদা অনুযায়ী.তবে ২৫০ ফুটের বেশি না।পানির লাইন৮৫ ফুটের বেশি হলে পানি ঠিক মত যাবে না।
লেয়ারের ক্ষেত্রে মাপ টা নির্ধারিত করে করতে হবে আর সোনালী বা ব্রয়লারে হলে কিছুটা কম বেশি হতে পারে যেহেতু খাচা থাকে না।
ব্রয়লার / সোনালী হলে প্রস্থ ১০-২৫ ফুট আর লম্বা ২৫০ ফুট করতে পারেন।
#.ঘরের চালা বাহিরের দিকে ৩-৪ ফুট বাড়তি রাখতে হবে যাতে বৃষ্টির পানি ঢুকতে না পারে.
# মেঝে পাকা করতে হবে।(ব্রয়লারের ক্ষেত্রে ফ্লোর পাকা হলে ফ্লোর একটু ভিজা ভিজা থাকে)তবে মাটির সাথে সিমেন্ট মিশিয়ে হালকা পাকা করা যেতে পারে)
কাঁচা সেড হলে ৪ইঞ্চি মাটির নিচে পলিথিন বিছিয়ে মাটি দিয়ে দিলে ফ্লোর ভাল থাকবে ভেজা ভেজা ভাব থাকবে না।মুরগি ভাল থাকবে।পলিথিন টা একটু ভাল মানের হলে বেশি ভাল।
#ঘরের চালা টিন বা সিমেন্ট শিট বা টিন,গোল্পাতা,ছন ,খড় দিয়ে করা যায়.
#গরম প্রতিরোধের জন্য চালার নিচে কাঠ বা হাডবোড বা বাশের চাটা বা ইনসুলেটর ব্যবহার করা যায়.(তবে এতে ইঁদুরের উপদ্রপ বেড়ে যায় কারণ ইদুর সিলিং এর উপর বাসা বাধে,বাচ্চা ফুটায়,দ্রুত ইদুর বেড়ে যায়) ১জোড়া ইদুর বছরে ১৫ হাজার বাচ্চা দিয়ে থাকে(নাতি নাতনী সহ যারা মাসে মাসে বাচ্চা দিতে থাকে).২০হাজার পায়খানা করে।
#এক শেড হতে অন্য শেডর দূরত্ব হবে প্রস্থের দিগুণ.
#শেডের চারদিকে দু ধরনের পর্দা( শীতের সময় ভিতের দিকে পাতলা চট এবং বাইরের দিকে কাপড় বা পলিথিন দেয়া উচিত).পর্দা এমনভাবে সেট করতে হবে যাতে নিচ হতে উপরে তোলা যায়.
#.সিলিং ফ্যান থেকে স্ট্যান্ড ফ্যান ভাল, এমনভাবে সেট করতে হবে যাতে বাতাস দক্ষিণ থেকে উত্তর দিকে যায়.
স্ট্যান্ড ফ্যানের কিছু সমস্যা আছে যেমন অনেক ফ্যান লাগবে খরচ বেশি,সব মুরগিতে বাতাস লাগেনা।
# শেডে চারদিকে সেড থেকে ৪-৫ফুট দূরে নেট/বেড়া দিয়ে ঘিরে দিতে হবে যেন ইদুর বা অন্যপ্রানী ঢুকতে না পারে.
#শেডের সাইড ওয়ালের উপর থেকে ৩ফুট জি আই নেট আর বাকীটুকু জালের নেট বা জি আই নেট দিতে হবে।
#ঘরের পূর্ব পশ্চিম দেয়াল দিয়ে বন্ধ করা যেতে পারে.
সেড জীবাণু মুক্তকরণ ঠিক মত করলে ৮০% জীবাণূ কমে যায়।
২.শেড জীবাণুমুক্তকরণ
#শেডের উপর হতে নিচ পর্যন্ত পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলতে হবে এবং মেঝে,সিলিং,নেট,দরজা,ফ্যান,জানালা,পর্দা ইত্তাদি.
#ঘরের মেঝে পাকা হলে ২-২.৫ কেজি কস্টিক সোডা পানিতে মিশিয়ে ১০০০ বর্গফুট ফ্লোরকে ১২ ঘন্টা ভিজিয়ে রেখে, তারপর পানি বের করে ডিটারজেন্ট দিয়ে ধুয়ে করতে হবে.ধৌত শেষে ঘরটিকে ভালভাবে শুকাতে হবে.(ডিটারজেন্ট ৬কেজি ১০০০বর্গফুট এর জন্য)
তবে সেডের ভিতর মাঝে ড্রেইন থাকলে এটা সম্বব হয় না।
#ঘর শুকিয়ে গেলে নিম্নোক্ত দ্রবন দিয়ে ঘরের ফ্লোরকে লেপে দিতে হবে.
১০০০ বর্গফুট জায়গার জন্য:
চুন ১৫০০গ্রাম
ফরমালিন। ৫০০মিলি
কেরোসিন। ৫০০মিলি
ব্লিচিং পাউডার।৫০০গ্রাম
তুতে ৫০০গ্রাম
পানি ১০লিটার
#খাবার পাত্র ও পানির পাত্র, ব্রুডার,চিকগার্ড পানি দিয়ে পরিস্কার করে,জীবাণূনাশক দিয়ে স্প্রে করে ঘরে ঢুকাতে হবে.
#মশা মাছি ধংশের জন্য জীবণূনাশক স্প্রে করতে হবে.
#শেডে বাচ্চা আসার ২৪ ঘন্টা আগে ফিউমিগেশন শেষ করতে পারলে ভাল.ফিউমিগেশন করার আগে শেড বায়ুরুদ্ধ করতে হবে.মানে চারদিকে পর্দা ভালভাবে আটকাতে হবে.
#ফিউমিগেশন করার নিয়ম:
উপাদান:
পটাশিয়াম পারম্যাংগানেট
ফরমালিন
মাটির পাত্র ৮-১০টি.
পটাশিয়াম পারমেংগানেট কতটুকু লাগবে তা বের করার নিয়ম:
লম্বা xচওড়া x উচ্চতা x০.2 কেজি কে ১০০০ দিয়ে ভাগ করতে হবে.
যতটুকু আসবে তার দ্বিগুণ ফরমালিন লাগবে.
যদি একটি ঘর লম্বা ৪৫ফুট,প্রস্থ ২৪ ফুট আর উচ্চতা ৯ ফুট হয়
গুণ করলে পাওয়া যায় ১.৯৪৪ মানে ২কেজি।
তাহলে পটাশ ২কেজি আর ফরমালিন দ্বিগুণ ৪লিটার
#পাত্রে আগে পটাশ দিয়ে তারপর ফরমালিন ঢালতে হবে.
#২৪ ঘন্টা পর পর্দা খুলতে হবে.
মুরগীর ঘর বা শেড ফিউমিগেশন পদ্ধতি
১। প্রতি ১০০ ঘনফুট ( শেডের দৈর্ঘ্য, প্রস্থ ও উচ্চতার গুণফল) জায়গার জন্য ২০ গ্রাম পটামিয়াম পারম্যাঙ্গানেট এবং ৪০ মিলি লিটার ৩০% ফরমালিন সলিউশন ব্যবহার করতে হবে।
২। ফিউমিগেশন শুরুর পূর্বে সেডের প্রয়োজনীয় ব্রুডিং মালামাল যেমন ব্রুডার, ড্রিংকার, চিক ট্রে,প্লেইন সীট ইত্যাদি এবং সেডের সমস্ত অংশে তুষ বিছানো আছে কিনা দেখতে হবে।
৩। শেডের চতুর পার্শে ভাল করে চেক দিতে হবে এবং সব লিকেজ বন্ধ করতে হবে যাতে ফিউমিগেশনের সময় বাতাস না বের হতে পারে এবং শেড সম্পর্ণ এয়ার টাইট অবস্থায় থাকে।
৪। এবার সেডের আয়তন অনুযায়ী যতটুকু পটাসিয়াম পারম্যাঙ্গানেট এবং ফরমালিন দরকার তা হিসাব করতে হবে।
৫। ফিউমিগেশনের জন্য মাটির পাত্র অথবা ব্লিচিং এর খালি ড্রাম প্রস্তুত রাখতে হবে।
৬। উদাহরণ স্বরুপ যদি একটি সেডের জন্য ৮ কেজি পটাসিয়াম পারম্যাঙ্গানেট এবং ১৬ লিটার ফরমালিন দরকার হয় তাহলে ৮ টি ২ লিটারের খালি বোতল এবং ৮ টি মাটির পাত্র অথবা ব্লিচিং এর খালি ড্রাম দরকার।
৭। এবার প্রতিটি পাত্রে ১ কেজি পটামিয়াম পারম্যাঙ্গানেট নিতে হবে এবং ২ লিটার ফরমালিন আলাদাভাবে প্রস্তুত রাখতে হবে।
৮। এবার পাত্রের যে জায়গায় ফরমালিন ঢালা হবে তার চারদিকের তুষগুলি ২ ফুট পরিমান সরিয়ে দিতে হবে এবং পটাসিয়াম পারম্যাঙ্গানেটর উপর ফরমালিন ঢালার কাজ সেডের শেষ প্রান্ত থেকে শুরু করতে হবে।
৯।এবার পটামিয়াম পারম্যাঙ্গানেটর উপর ফরমালিন ঢালার কাজ একই ভাবে দ্রুত সামনের দিকে এগিয়ে যেতে হবে এবং সেডের সার্ভিস রুম পর্যন্ত এসে সেডের দরজা বন্ধ করে দিতে হবে এবং এসময় সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে সেক্ষেত্রে মাক্স, টুপি, ফায়ার এক্সটিংগুইসার ইত্যাদি ব্যবহার করতে হবে ।
১০। ২৪- ৩৬ ঘন্টা সেডের দরজা বন্ধ রাখতে হবে।
নোটঃগাম্বোরো,রানিক্ষেত,এ আই, ও মেরেক্স ফার্মে বা আশে পাশে ৩ মাস থাকে ,মেরেক্স আরো বেশি সময় থাকে তাই পরিস্কার করার পর সেড ৩ মাস রেস্টে রাখা উচিত।সেডের আশপাশ ও লিটার পরিস্কার করা উচিত।সালমোনেলাও কয়েক মাস থাকতে পারে।
পক্স একবার হলে সারা বছর থেকে যাত তাই পক্স দূর করা কঠিন।
কক্সিডিয়ার জীবাণূ কোন কিছু দিয়ে মারা যায় না শুধু ফর্মালিন এবং সেন্সুরীর বায়ো সিস্ট দিয়ে মারা যায়।
( নিচের লেখাটি নারিশ পোল্ট্রি এন্ড হ্যাচারী লিঃ এর)
শেড হতে চালান বের হবার পর কিভাবে জীবানু মারা যেতে পারেঃ
ডিটারজেন্ট / সাবান, ডিসইনফেকটেন্ট, গরম তাপ (অগ্নিশিখা বা বাস্প), সূর্য রশ্মি
প্লানিংঃ সফলভাবে ক্লিনিং করার জন্য প্লানিং খুবই জরুরী। কারণ যদি পূর্বে ফ্লকে কোন রোগের প্রাদুর্ভাব হয়ে থাকে তবে উপরের জীবানু বেচেঁ থাকার তালিকা অনুযায়ী শেডে মুরগী উঠানো বিরতি দিতে হবে। তার পর নতুন ফ্লক উঠাতে হবে। মনে রাখতে হবে উত্তম রুপে ক্লিনিংই পারে ৮০ ভাগ জীবানু মেরে ফেলতে।
ক্লিনিং কার্য পদ্ধতিঃ
ব্রয়লার শেড ক্লিনিং এর ধাপ সমূহ:
ক) স্প্রেঃ প্রথমত:মুরগী বিক্রি হওয়ার পর সমস্ত ফিডার, ড্রিংকার প্রথমে ম্যালাথিয়ন বা সেভিন ১০ মিলি/লিটার পানিতে রাখার পর পর্দা তুলে দিয়ে স্প্রে করতে হবে যাতে সেডের ভিতরে যত পোকা বা বিটল আছে সব মরে যায়। কারণ এগুলো যদি বেঁচে থাকে তবে পরবর্তী ফ্লকে জীবানু নিয়ে যাবে। দ্বিতীয়তঃ ১০% ফরমালিন দিয়ে অর্থাৎ ফরমালিন ৪০% এ থাকে তাকে ১ লিটার ফরমালিনে ৪ লিটার পানি দিয়ে সম্পূর্ন ঘর স্প্রে করতে হবে।
খ)যন্ত্রপাতি সরানোঃ ফরমালিন স্প্রে করার কমপক্ষে ১২ ঘন্টা পর শেডের ভিতরের ফিডার, ড্রিংকার বের করে ফেলতে হবে।
গ)লিটার সরানোঃ বস্তায় ভরে লিটার সরিয়ে ফেলতে হবে। যা বিক্রি করা যাবে অথবা সবজি ক্ষেতে সার হিসাবে ব্যবহার করা যেতে পারে।
ঘ) ডাস্ট সরানোঃফ্লোরে নারিকেলের ঝাড়ু, প্লাস্টিক ব্রাশ দিয়ে ধূলিকনা, মাটি, মুরগীর পাখনা, পায়খানা, রক্ত অথবা যদি অন্য কিছুু থাকে সব ভালভাবে পরিষ্কার করতে হবে।
ঙ) ওয়াসিংঃ-ঘরে পানি ব্যবহার করার পূর্বে নিশ্চিত হতে হবে যে ইলেকট্রিক মেইন সুইস অফ করা হয়েছে।
ঘরের মেঝে,পানি ও ডিটারজেন্ট পাউডার দ্বারা ভালভাবে ধুয়ে ফেলতে হবে।
তারপর কস্টিক সোডা ১.২৫ কেজি প্রতি ১০০০ বর্গফুট ফ্লোরে দিয়ে ২৪ ঘন্টা পানি দ্বারা ভিজিয়ে রাখতে হবে।
২৪ ঘন্টা পর কস্টিক সোডার পানি বের করে দিয়ে পরিস্কার পানি দিয়ে ফ্লোর ভালভাবে ধুয়ে ফেলতে হবে।(পাকা সেড না হলে এটা করা সম্বব না)
হাই প্রেসার মেশিন দিয়ে সিলিং,পার্শ্ব পর্দা ভাল ভাবে ধুয়ে ফেলতে হবে।
ফিডার,ড্রিংকার সমূহ ব্লিচিং পাউডার মিশ্রিত পানি ১ লিটার পানিতে ১০ গ্রাম দিয়ে কমপক্ষে ২৪ ঘন্টা ডুবিয়ে রাখতে হবে।
তারপর ভাল ভাবে পরিস্কার করতে হবে।
ফিডার,ড্রিংকার সমূহ সূর্য রশ্মিতে ভাল ভাবে শুকাতে হবে।
চ) শেড পোড়ানোঃ পূর্বে যদি রোগের প্রার্দুভাব বেশী থাকে তাহলে ফ্লেমগান বা আগুন দিয়ে সতর্কতার সাথে সেড পোড়ানোর ব্যবস্থা করা যেতে পারে।
ছ) হোয়াইট ওয়াসঃ চুনের সাথে নিম্নলিখিত জিনিস সমূহ ভালভাবে মিশ্রিত করে ফ্লোর,সাইট ওয়াল ভালভাবে চুনকাম বা হোয়াইট ওয়াস করতে হবে।
কোরেসিনঃ ১০ মিলি/লিটার পানিতে
ম্যালাথিয়নঃ ৫ মিলি/লিটার পানিতে
ফরমালিনঃ ১০ মিলি/লিটার পানিতে
ডিসইনফেকটেন্টঃ ১০ মিলি/লিটার পানিতে
তুতঃ ১০ গ্রাম/লিটার পানিতে
জ) লিটার ঢোকানোঃ লিটার শেডে ঢুকানোর পূর্বেই ম্যালাথিয়ন ও ফরমালিন স্প্রে করে পরিষ্কার শেডে ঢুকাতে হবে।
ঝ) ফিউমিগেশনঃ শেড বা ঘর পরিষ্কারকরণের সর্বশেষ ধাপ হচ্ছে ফিউমিগেশন করা।ফিউমিগেশন এর জন্য প্রথমে জানা থাকা প্রয়োজন ঘরের আয়তন।
ঘরের আয়তন=দৈর্ঘ×প্রস্থ×উচ্চতা
(বিঃ দ্রঃ #Single Strength ফিউমিগেশন এর জন্য ৪০ মিলি ফরমালিন এবং ২০ গ্রাম পটাশ ১০০ ঘন ফুট শেডের জন্য লাগবে, #Double Strength ফিউমিগেশন এর জন্য ৮০ মিলি ফরমালিন এবং ৪০ গ্রাম পটাশ ১০০ ঘন ফুট শেডের জন্য লাগবে, #Triple Strength ফিউমিগেশন এর জন্য ১২০ মিলি ফরমালিন এবং ৬০ গ্রাম পটাশ ১০০ ঘন ফুট শেডের জন্য লাগবে।)
ফিউমিউগেশন এর পূর্বে রোগের প্রার্দুভাব অনুযায়ী ঠিক করতে হবে যে শেডে কি #Double or Triple Strength-এ ফিউমিগেশন করব। সাধারণত আমরা #Double Strength-এ ফিউমিগেশন করে থাকি।
উদাহরণঃ ঘরের দৈর্ঘ্য ৬০ ফুট, প্রস্থ ২৫ ফুট, উচ্চতা ১২ ফুট এর ফিউমিগেশন এর জন্য কতটুকু পটাশ ও ফরমালিন লাগবে?
আয়তন=৬০×২৫×১২= ১৮০০০ ঘনফুট
১০০ ঘনফুট এর জন্য পটাশ লাগবে=৪০ গ্রাম
১ ” ” ” ” ” = (৪০÷১০০) গ্রাম
১৮০০০ ” ” ” ” ” =(৪০÷১০০×১৮০০০)=৭২০০ গ্রাম=৭.২ কেজি পটাশ=১৪.৪ লিটার ফরমালিন। (#Double Strength-ফিউমিগেশনের ক্ষেত্রে যতটুকু পটাশ লাগবে তার দ্বিগুন পরিমাণ ফরমালিন প্রয়োজন হবে)
সতর্কতাঃফিউমিগেশন এর জন মাটির পাত্র ব্যবহার করতে হবে; কখনও ফরমালিন এর মধ্যে পটাশ ঢালা যাবে না, অবশ্যই পটাশ এর মধ্যে ফরমালিন ঢালতে হবে।
ঞ) সেডের আশপাশ পরিস্কার করণঃ সেডের চারপাশের কমপক্ষে ১০ ফুট পরিমাণ জায়গা পরিস্কার পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে। কোন ক্রমেই কোন সবজি, গাছ থাকা যাবে না।
বিষয় গুলো Conceptual and Structural biosecurity এর ভিতর পড়ে।Operational biosecurity এর কিছু অংশ ও আছে।
১. খামারের জন্য সঠিক স্থান নির্বাচন।
• খামার তৈরির জন্য নির্বাচিত স্থান বড় রাস্তা থেকে একটু দূরে হতে হবে, যাতে গাড়ীর চলাচলের শব্দের কারনে খামারের প্রানীগুলো আতংকিত হয়ে না পড়ে।।
• লোকালয় বা আবাসিক ঘন বসতি এলাকা হতে দূরে খামার স্থাপন করতে হবে।
• অন্য মুরগির খামার বা প্রানীর ঘর থেকে নিরাপদ দূরত্বে হতে হবে। খামারের ঘরগুলো বেশী কাছাকাছি হলে কোন এক ঘরে জীবাণু আক্রান্ত হলে তা দ্রুত অন্য শেডে ছড়িয়ে পড়ে।।
• পর্যাপ্ত আলো-বাতাসযুক্ত খোলামেলা পরিবেশ হতে হবে। পর্যাপ্ত আলো বাতাশ না পেলে রোগ জীবাণু বেশি হয় ফলে খামারি ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
• শব্দ সৃষ্টিকারী ও দুষিত গ্যাস বা বর্জ্য নির্গমনকারী শিল্প প্রতিষ্ঠান থেকে দূরে হতে হবে।
• বন্যামুক্ত উঁচু জায়গায় যার আশেপাশে পানি থাকে না এমন স্থানে খামার করতে হবে, অনেক সময় দ্রুত বন্যার পানি এসে খামারের প্রাণী মারা যায়, এমন সম্ভাবনা থাকলে খামার ঘর করার সময় উঁচু করে করতে হবে।
• বসতবাড়ি, গোয়ালঘর ও আবর্জনার স্তুপ যেখান থেকে রোগ জীবাণু উৎপত্তি হয় এমন জায়গা থেকে দূরে খামার ঘর স্থাপন করতে হবে।
• ঝোপঝাড় নেই কিন্তু বড় গাছপালা আছে এমন স্থানে খামার স্থাপন করতে হবে।
• যাতায়াতের সুবিধা আছে এমন জায়গায় খামার স্থাপন করতে হবে।
• যেখানে খামার করবেন সেখানে বিদ্যুৎ সরবরাহের ব্যবস্থা থাকতে হবে।
• বিশুদ্ধ পানি সরবরাহের ব্যবস্থা থাকতে হবে। খামারে বিশুদ্ধ পানি না থাকলে প্রাণীগুলো অসুস্থ হনে বেশী, তাই লাভজনক খামারের পূর্ব শর্ত হলো বিশুদ্ধ পানি।
• বাজারজাত করনের সুবিধা আছে এমন জায়গায় খামার স্থাপন করলে উৎপাদিত পণ্যের ভালো দাম পাওয়া যায়।
• মুরগির বাচ্চা ও মুরগী পালনের কাঁচামালের সহজ লভ্যতা থাকতে হবে।
তাহিয়া পোল্ট্রি কমপ্লেক্স
ব্রয়লার /লেয়ার/সোনালী সেড জীবাণু মুক্তকরণ পদ্ধতি ধারাবাহিক ভাবে(কেউ ইচ্ছে করলে অল্প দিনেও পরিস্কার করতে পারবে কিন্তু ধারাবাহিকতা যেন বজায় থাকে)
শুকনা অবস্থায় কাজ
১ম দিনের কাজ
খাবার পাত্রের অবশিস্ট খাবার গুলি বের করে কারো কাছে বিক্রি বা নিজের কাজে লাগাতে পারেন।
মুরগি বিক্রির পর খাবার ও পানির পাত্র,পার্টিশন,পর্দা বের করে পরিস্কার করতে হবে।
২য় দিনের কাজ
ব্রয়লার ঘরের ভিতর ছাদ,পাশের দেয়াল,নেট হতে ধূলা,মাকসার ঝাল,ঝুল,আবর্জনা ঝেড়ে পরিস্কার করতে হবে
৩য় দিনের কাজ
সেডের উপর থেকে নিচে পরিস্কার করতে হবে।পুরনো লিটার বিক্রি বা কৃষি জমিতে বা ব্রয়লার ঘর হতে ৫০০ফুট দূরে রাখতে হবে যাতে যেখান থেকে বাতাস ব্রয়লার ঘরে না আসে।
ব্রয়লারে যদি ভাইরাস আক্রান্ত করে তাহলে ২৪ ঘন্টা ডিসইনফেক্ট্যান্ট দিয়ে রেখে দেয়ার পরে লিটার সরাতে হবে।
৪তম দিনের কাজ
ঘরের ভিতরে ও বাহিরে পাখির পালকগুলি সংগ্রহ করে পুড়িয়ে ফেলতে হবে।
সেডের বাহিরের বর্জ্য গুলি কোদাল বা ঝাটা দিয়ে পরিস্কার করে পুড়িয়ে ফেলতে হবে।
উকুন,মাছি,মাইট,পোকামকাড়ের জন্য কীটনাশক স্প্রে করা যায়।
৫ম দিনের কাজ
ঘরের ভিতর ও বাহিরে মাটি দিয়ে লেপে দিতে হবে।
ঘরের চারদিক পরিস্কার করতে হবে।
বিদ্যুতের লাইন ও বাল্ব গুলো কাপড় দিয়ে পরিস্কার করতে হবে।
যদি সেডে ভাইরাসে আক্রমণ হয় এবং অনেক মারা যায় তাহলে ফ্লেম গান দিয়ে ফার্ম পরিশোধন করতে পারলে ভাল
৬তম দিনের কাজ
ডিটারজেন্ট মিশ্রিত জলে বা ২%ফর্মালিন মিশ্রিত জলে ৬ঘন্টা রেখে পর্দা গুলি কাচার পর রোদে শুকিয়ে স্টোর রুমে রাখতে হবে।
পানির পাইপ হলে ৫%হাইড্রোজেন পার অক্সাইড দিয়ে পরিস্কার রোদে শুকিয়ে স্টোর রুমে রাখতে হবে।
ঘরের মেঝে,ছাদ,দেয়ালে কোন ফুটো থাকলে তা মেরামত করতে হবে যাতে বন্য পাখী,ইদুর প্রবেশ না করে
ভেজা অবস্থায় কাজঃ
৭তম দিনের কাজ
যদি পানির পানির ট্যাংক থাকে তাহলে পানির ট্যাংক শক্ত ব্রাশ দিয়ে ঘষে শেওলা,আঠালো কাদা,আবর্জনা পানি দিয়ে ধুয়ে পরিস্কার করতে হবে.৫% ব্লিচিং পাউডার দিয়ে ট্যাংকটি ১২-২৪ঘ ন্টা রাখার পর চূড়ান্ত পর্যায়ে সাদা পানি দিয়ে ধুয়ে পএইস্কার করতে হবে।
জলের পাইপ লাইন পরিস্কারঃ৫% হাইড্রোজেন পার অক্সাইড জলে পুরু পাইপ লাইন টি ভর্তি করে ৬ ঘন্টা রাখার পর ঐ পানি বাহির করে পরিস্কার পানি দিয়ে পাইপ লাইন ধুতে হবে।
২% কস্টক সোডা মিশ্রিত গরম জলে তীব্র গতিতে জল স্প্রে করলে সিমেন্টের ফ্লোর পরিস্কার করা সহজ হয়।
মাটির মেঝে হলে ১০০০ বর্গ ফুটের জন্য ৩০লিটার পানিতে ১কেজিকস্টিক সোডা মিশ্রণ করে মেঝেতে ভিজিয়ে রাখতে হবে এবং পরে এই দ্রবণ ভালভাবে মুছে পরিস্কার করতে হবে।
৮ তম দিনের কাজ
পরবর্তী ব্যাচের জন্য মেডিসিন,ডিসইনফেক্ট্যান্ট হাইড্রোজেন পার অক্সাইড,ব্লিচিং পাউডার কিনতে হবে।
সব যন্তপাতি ডিটারজেন্ট দিয়ে পরিস্কার করতে হবে।পানির পাত্র হাইড্রোক্লোরিক এসিড দিয়ে পরিস্কার করতে হবে।
১০০০ বর্গফুট জায়গার জন্য ২০কেজি চুন মাটির গামলা বা ট্যাংকে সারারাত ভিজিয়ে রাখতে হবে।
৯তম দিনের কাজ
হোয়াইট ওয়াশঃ
২০কেজি চুন,৫০০মিলি কেরোসিস,৩০লিটার পানি,৪০০গ্রাম ব্লিচিং মিক্স করে ১০০০ বর্গফুট জায়গায় লেপে দিতে হবে।
ঘরের ভিতর,দেয়াল।মেঝে,পিলার উপর থেকে নিচ লেপে দিতে হবে এবং ঘরের চারপাশ ছিটিয়ে দিতে হবে।
১০-১২ দিনের কাজ
ঘরটি ভাল ভাবে শুকিয়ে তালা বদ্ধ করে রাখতে হবে।
খামা্রের খামারীদের বিশ্রাম দিতে হবে।
ডিসইনফেক্ট্যান্ট ও ব্রুডিংঃ
১৩দিনের কাজ
নতুন লিটার এনে ফ্লোরে বিছিয়ে দিতে হবে এবং দিতে ২-৩বার উল্টিয়ে দিতে হবে যাতে শুকিয়ে যায়
১৪ তম দিনের কাজ
পর্দাগুলি ঝুলিয়ে দিতে হবে।
ব্রুডিং এর জন্য চিক গার্ড,ব্রুডার,খাবার ও পানির পাত্র,পেপার রেডি করতে হবে।
১৫ তম দিনের কাজ
ঘরে জীবাণূ নাশক স্প্রে করুন বা ফিউমিগেশন করুন
১৬ তম দিনের কাজ
বাচ্চা আসার আগেই সেডের লাইট,ব্রুডার,চিকগার্ড ,পেপার সেট করতে হবে এবং বাল্ব জ্বালিয়ে তাপের ব্যবস্থা করতে হবে।
খাবার নিয়ে আসতে হবে।
জীবাণূ নাশক দিয়ে ঘরের ভিতর ও বাহিরে স্প্রে করতে হবে।
খাবার রাখার ঘর টি পরিস্কার করতে হবে।