মুরগির ফার্মে কাজের রুটিন
আমরা অনেকেই মুরগি ফার্ম দিতে চাই বা দেই,সেটা হোক নিজের শখের বসে বা কর্মসংস্থানের জন্য।কিন্তু আমরা অনেকেই জানি না কি ভাবে মুরগির ফার্মে সময় দিতে হয়? মুরগির ফার্মে কাজের রুটিন ধারাবাহিক ভাবে নিচে আলোচনা করা হলোঃ
ক.দৈনিক কাজ ঃ
১.পানির পাত্র পরিস্কার করা এবং খাবার পাত্র মুছে ফেলা ( রাতের বেলা).ইদুর এসে খাবার পাত্রে পায়খানা করে জীবাণু ছড়ায়.
২.লেয়ারের এর ক্ষেত্রে
ওষধ,খাবার এবং পানি দেয়া(২-৩ বার)
গরমে ২বার সকাল ৫-৫.৩০টায়,বিকাল ২-৪টায়,
শীতে ৩বার দেয়া যায় সকাল ৫-৬টায়,দুপুরে ১২টায়,বিকাল ৪টায়।
ব্রয়লার এর ক্ষেত্রে
গরমে সকাল ৫-৬টায় ,বিকাল ৩-৫টায়,রাত ৮-৯টায়।
শীতে সকাল ৬-৭টায়,দুপুর ১২টায়,বিকাল ৪-৫টায়,রাত ৯-১০টায়।
৩. সঠিক সময়ে লাইট অন এবং অফ করা.প্রডাকশন এর ক্ষেত্রে রাত ৯-১০টায় অফ করা।
৪.রাতে ফ্লোর ঝাড়ু দেয়া
৫.শীতকালে ভিতরে ভাইরুসিড দিয়ে এবং বাহিরে ডিটারজেন্ট বা সোডা দিয়ে একদিন পর পর স্প্রে করা.
৬. পানিতে ১ দিন পর পর এসিডিফায়ার এবং সেফওয়াট( ক্লোরিন) দেয়া পানির পি এইচ যদি বেশি থাকে।(৮ বা ৮এর বেশি হয়)
৭. সব কিছুর রেকর্ড রাখা(ডিম,পানি,খাবার,ওষধ,টিকা,কৃমিনাশক,মরটালিটি ,মর্বিডিট)
৮।লিটার উল্টে দেয়া গ্রোয়ার পিরিয়ডে।
৯।নিপল লাইন হলে পানি্র লাইন ফ্লাশ করা(৩০মিনিট,রাত্রে লাইট অফ করার পর)
১০।খাবার নাড়া দিতে হবে দিনে ৩বার(লেয়ার খাচায় তোলার পর বা ফ্লোরে থাকা অবস্থায় ও ঝাকিয়ে দেয়া যায়।এতে মুরগি সমভাবে খাবে।ছোট বড় হবে না।
১১.কর্মচারীদের ফার্মের ফার্মের ভিতর বা কাছাকাছি থাকতে হবে কারণ সেডের ভিতর বা কাছাকাছি কুকুর শিয়াল বা অন্য প্রানী আসতে পারে ।এতে মুরগি ভয় পায়া বা মুরগি মেরে ফেলতে পারে।তাছাড়া প্রয়োজন অনুযায়ী ফায়ন বা লাইট বন্ধ করতে হয়।
খ.সাপ্তাহিক কাজ ঃ
১. খাবার পাত্র পানি,ডিটারজেন্ট এবং তুতে দিয়ে পরিস্কার করা.
২. নেট,খাচা এবং ছাদ থেকে মাকড়সার ঝাল পরিস্কার করা.
৩. ভিটামিন ডব্লিউ এস এবং এ ডি ই ১৫ দিন পর পর ৪-৫ দিন পানিতে দেয়া.
৪.মুরগির ওজন নিয়ে ইউনিফর্মিটি বের করতে হবে.(লেয়ারের ক্ষেত্রে প্রতি সপ্তাহে ১৮ সপ্তাহ পর্যন্ত ১৯-২৫ সপ্তাহ পর্যন্ত ১৫দিন পর পর, ৪০ সপ্তাহ পর্যন্ত ১মাস পর পর ,ব্রয়লার ব্রিডারের ক্ষেত্রে প্রতি সপ্তাহে ওজন নিয়ে ইউনিফর্মিটি বের করতে হবে,৩০ সপ্তাহ পর্যন্ত ৭দিনে একবার,৪০ সপ্তাহের পর ২-৩ সপ্তাহের পর পর)
গ. মাসিক কাজ ঃ
১. ই সেল( ভিটামিন ই),লিভারটনিক,প্রবায়োটিক,মাইকোপ্লাজমার ডোজ ৩০-৪৫দিন পর পর ৩-৪ দিন প্রয়োগ করা.
২.বাল্ব পরিস্কার করা.
৩. মাচা বা খাচা হলে ২-৩ মাস পর পর কৃমিনাশক দেয়া, ফ্লোরে হলে দেড়-২ মাস পর পর,
শীতকাল হলে ৪৫ দিন পর পর আর অন্য সময় ২ মাস পর পর রানিক্ষেতের টিকা দেয়া.
৪.এসিডিফায়ার,প্রবায়োটিক এবং ক্লোরিন না খাওয়ালে মাসে একবার সালমোনেলার ডোজ করা.
৫।পানির ট্যাংক এ ব্লিচিং পাউডার ১ঘণ্টা রেখে তারপর পরিস্কার করা।
পানির লাইনে এসিটিক এসিড ৩% দিয়ে পরিস্কার করা।( রাত্রে লাইট অফ করার পর)
৬। খাচা পুরান হলে ভেংগে যেতে পারে ,মুরগি বের হয়ে যায়।ডিম পড়ে যায়।খাচা রিপেয়ারিং করতে হবে।
ঠোকরা ঠুকরি করলে আলাদা খোপে রাখতে হবে।
রাতে কোন পশু পাখি আসে কিনা খেয়াল রাখতে হবে।
অনেক সময় ফ্লোর দেবে যেতে পারে বা অন্য কারণে পানির লাইন উচুনিচু হয়ে যেতে পারে এতে অনেক মুরগি পানি খেতে পারে না।ডিমকমে যায়।
৭।১৫-২০দিন পর পর সেডের ভিতর পাথর জমা হলে সেগুলো সরাতে হবে
অন্যান্য কাজ
১।সেডের বাহিরে ঘাস হলে তা পরিস্কার করা
২।ইদুরের বিষ দেয়া,গর্ত থাকলে তা বন্ধ করা।
৩।কর্মচারীদের মনিটরিং করা ঠিক মত কাজ করে কিনা।কর্মচারীরা ঠিক মত পাত্র পরিস্কারকরবেনা।লিটার সরাবেনা।পর্দা উঠাবে না,ডিম তুল্পবে না।আক্রান্ত ও মরা মুরগি বের করবে না,ঠিক সময়ে সুয়ে খাবার ও পানি দিবে না,হিসাব রাখবে না,রাত্রে শিকারী পাখি বা পশু আসবে কিনা খেয়াল করবে না,খাচা নস্ট হয়ে ডিম পড়ে কিনা দেখবে না।
৪,ব্রয়লার বা লেয়ার/সোনালী মুরগি বিক্রির পর ধারাবাহিকভাবে পরিস্কার করা
নোট: যে যতগুলো পয়েন্ট মেনে চলবে সে ততটুকু ভাল করবে,যার যার সামর্থ্য এবং সুযোগ অনুযায়ী.