মুরগির পক্স,এপিডিমিওলোজ,বিস্তার,প্রকারভেদ,লক্ষন,চিকিৎসা এবং প্রতিরোধ ও টিকাঃবিস্তারিত
এপিডিমিওলোজিঃ
পরিবেশঃ
এটি শীতের শেষে,বর্ষাকালে এবং বসন্তকালে বেশি হয়,একে এভিয়ান ডিস্টেম্পার বা বসন্ত নামেও ডাকা হয়।এভিপক্স গোত্রের সবচেয়ে বড় ডি এন এ ভাইরাস।পক্সভিরিডি ফ্যামিলির পক্স ভাইরাস।এটি যে কোন পরিবেশে বাচতে পারে মানে পরিবেশে রেজিস্টেন্ট এবং একটি খামার একবার আক্রান্ত হলে তা চিরদিনের জন্য সংক্রমনের কারণ হয়ে দাঁড়ায়।চিকেন ইনফেকশাস এনিমিয়া হলে পক্স হবার সম্বাবনা বেশি থাকে।নিচু এলাকা যেখানে বন্ধ পানি থাকে কারণ সেখানে মাছি/পোকামাকড় বেশি থাকে।তাছাড়া মুরগির লিটার ফেলানোর গর্তে পোকামাকড় থাকে।
বিভিন্ন বয়সের মুরগি পালন করলে।ফার্মের আশ পাশে আগাছা বেশি থাকলে।ঠোটকাটা ভাল না হলে,ব্লিডিং বেশি হলে।ঠোকরা ঠুকরি করলে।কিছু কিছু ব্রীডে পক্স বেশি হয়।মর্বিডিটি ৯৫%।
এজেন্টঃ
এই ভাইরাস ফার্মে কয়েক মাস বেঁচে থাকতে পারে।জীবানূনাশক দিয়ে সহজে মারা যায় না তবে ১-২% সোডিয়াম হাইডোক্সাইড ভাইরাসের উপর কিছুটা কাজ করে।ইনকিউবেশন পিরিয়ড ২-২০(slow-spreading viral diseases) দিন এবং সুস্থ হতে প্রায় ২-৪ সপ্তাহ সময় লাগে.যে কোন বয়সে হয় কিন্তু বাচ্চা মুরগিতে বেশি হয় এবং মারা যায়।বিভিন্ন বয়সের মুরগি পালন করলে এক সেড থেকে অন্য সেডে যায়।এটি স্পেসিস স্পেসিফিক এবং সারা পৃথিবীতে দেখা যায়।Pathogenic pigeon poxvirus produces mild infections in chicken and turkeys.
মোরগে বেশি হয় কারণ এরা ক্যানাব্লিজম করে চামড়ায় ক্ষত করে।মর্বিডিটি ৫-৯০% হতে পারে এবং ৫-১৫% ডিম কমে যায়।ডিম স্বাভাবিক হতে কয়েক সপ্তাহ লাগে।১৮-১৯ সপ্তাহে হলে প্রডাকশন ১ মাস পিছিয়ে যায় যাতে প্রতি হাজারে ৫০০০০-১লাখ টাকা লস।তাই অবহেলা করার সুযোগ নাই।টিকা দিতে হবে।
মর্টালিটি ১-২% কিন্তু ওয়েট পক্স হলে ৪০-৬০% হতে পারে।একটা মুরগি সুস্থ হতে ১০-১৪ দিন লাগে কিন্তু সেডের টোটাল সুস্থতা আসতে কোন সময় প্রায় ৬ সপ্তাহ লাগে।কবুতর ভাল হতে ৩-৪ সপ্তাহ লাগে।
মরটালিটি এবং মর্বিডিটি নির্ভর করেঃমুরগির বয়স,ভাইরাসের তীব্রতা,পুস্টিমান,তাপমাত্রা,সেডের অবস্থা এবং অন্য কোন রোগের উপস্থিতি।
রোগের বিস্তারঃ
নিঃশ্বাসের সাহায্যে বাতাসের মাধ্যমে.সরাসরি কন্টাকে আসলে.
মশা,ফ্লি,আঠালি এবং মাই্ট তবে মশা বেশি থাকলে রোগটি দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে।।
ক্যানাবলিজম,খাবার এবং পানি.এই ভাইরাস মুরগিতে মাস থেকে বছরের পর বছর থাকতে পারে।
হোস্টঃ
Fowl pox virus is typical species.প্রায়(৬০ প্রজাতি) সব পাখিতে হয়।
মুরগি,টার্কি,কবুতর ও ফ্রিসেন্ট তবে টার্কি তে বেশি হয়।টার্কিতে বেশি মারাত্মকভাবে হয়।
টার্কিতে পিজন পক্সের ভ্যাক্সিন ১দিনেও দেয়া লাগতে পারে এবং ব্রিডারে প্রডাকশনের সময় ভ্যাক্সিন দেয়া উচিত।বাচ্চা বেশি সংবেদনশীল এবং এবং মারাত্মক হয়।
প্যাথোজেনেসিসঃ
চামড়ার কোন ক্ষত দিয়ে বডিতে ঢুকে বা নাক এবং মুখ দিয়ে ঢুকেpapules;vesicles;pustules.scabs.Fribrinonecrotic proliferative lesion.Mortality due to suffocation,starvation,dehydration..upper Respiratory tract(oropharynx.laryns,trachea).upper alimentary tract( mouth and oesophagus)
লক্ষণঃ
Lesion on head,combs and wattles are wart like appearance,yellow to dark brown in color.এটি ধীরে ধীরে শুরু হয় এবং যতদিন না গুটি দেখা যায় তার আগে বুঝা যায়না।
জ্বর হয়.।ডিপ্রেশন।মুখের ভিতর ঘা হয় তাই খেতে পারেনা.শ্বাসনালিতে গুটি উঠলে শ্বাস কস্ট হয়।caseous deposits in mouth,throat and trachea.
চোখে গুটি,চোখ আংশিক বা পুরু বন্ধ হয়ে যায়।পালকবিহীন স্থানে লাল লাল দাগ হয় যা পরে মসুর ডালের মত হয়।মুরগি দুর্বল হয়ে পড়ে এবং মারা যায়।রুচি ও ওজন কমে যায়।ডিম পাড়া মুরগির ডিম কমে যায়।
পোস্ট মর্টেমঃ
Wet pox in mouth,oesophagus,trachea,other part skin of leg,cloaca that is yellow-white and cheesy in appearance.।মুখে,ইসোফেগাসে,ট্রাকিয়ায় হলদেটে -সাদা চিজির মত বস্তু দেখা যায়।
প্রকারভেদঃ
এটি ৩ ভাবে দেখা যায়
কিউটেনিয়াস প্রথমে হলুদ,বাদামী কালচে পালকবিহীন স্থানে নডিউল হয়।
অকুলার
ডিপথেরিকঃজিহবায় হলুদ পনিরের মত হয়,উঠালে আলসারের মত দেখা যায়।এতে খাবার বন্ধ হয় এবং মারা যায়।
ক ।ড্রাই বা কিউটেনিয়াস বা মাইল্ড
লোকাল কিউটেনিয়াস লেশন।কম্ব,ওয়াটল,পায়ে এবং চোখে নডিউল দেখা দেয়।চোখে নডিউল হলে চোখ বন্ধ হয়ে যায় ফলে খেতে পারেনা,ওজন এবং ডিম কমে যায়।
খঃসিভিয়ার বা একোউট বা ওয়েট বা কেংকার বা ডিপথেরিক
টিকা দেয়া না থাকলে ৫০-৬০% মারা যায়।জেনারেলাইজড ডিফিউজড লেশন।
ডিপথেরিক হলুদ লেশন ( ফ্যারিক্স,ল্যারিক্স,কঞ্জাংটিভা এবং ট্রাকিয়াতে হয় ফলে শ্বাসকষ্টে মারা যায়,মুখ এবং ইসোফেগাসে হলে না খেয়ে শুকিয়ে যায়)Formation of massive yellow cheesy necrotic masses in the larynx and adjacent trachea.birds die suddenly from asphyxiation।ড্রাই পক্স থেকে ওয়েট পক্স হয় আবার ওয়েট পক্স থেকে ড্রাই পক্স হতে পারে মানে ভাইস ভারসা।ট্রাকিয়া ও ল্যারিংজিয়াল আক্রান্ত হলে ল্যারিংগোটাকিয়াটিসের সাথে মিলে যেতে পারে।
ট্রাইকিমোনিয়াসিসের সাথে মিলে যেতে পারে।
ভিরুলেন্ট স্টেইন দিয়ে আক্রান্ত হলে সিস্টেমিক রুপ ধারন করে মানে ইন্টারনাল অর্গান আক্রান্ত হয়।স্নায়ুত ন্ত্র আক্রান্ত হলে প্রাথমিক অবস্থায় খুড়িয়ে হাটে,কখনো ২ পা সামনে আবার ২ পা পিছনে চলে যায়।খাবার বন্ধ করে দেয় এবং মারা যায়।মাথা ও ডানা ঝুলে যায়,শরীর কাপে এবং হালকা হয়ে যায়।
চোখের আইরিশ ধূসর হয়ে যায় এবং পিউপিল অসম আকার ধারন করে।আক্রান্ত মুরগির শ্বাস কস্ট হতে পারে।
পক্স নির্ণয় পদ্ধতিঃ
লক্ষণ দেখে
পোস্ট মর্টেম
আগারজেল প্রিসিপিটেশন টেস্ট
চিকিৎসাঃ
এন্টিভাইরাল এসাইক্লোভির(acyclovir) ভাইরাক্স দেয়া যায় পানিতে।
১ট্যাব্লেট ৩লিটার পানিতে ৫দিন
একটা এন্টিবায়োটিক টেট্রাসাইক্লিন বা ক্লোইনোলন দেয়া যায়।
ভিটামিন সি এবং এ ডি ই দেয়া যায় শুকানোর জন্য।স্প্রে করতে হবে।
মুরগি অল্প হলে Ectonil পটাশের সাথে মিক্স করে স্পটে লাগানো যায়।
যে কোন সময় অল্প মাত্রায় দেখা গেলে টিকা দিতে হবে।
১% পটাসিয়াম পারম্যাংগানেট খাওয়ালে উপকার পাওয়া যায় এবং তা দিয়ে মুছে দিলে ভাল হয়।
প্রতিরোধঃ
মশা,আঠালি এবং ফ্লি দূর করতে হবে।টিকা দিতে হবে ৪-৬ সপ্তাহে ১ বার এবং যদি বার বার পক্স হয় তাহলে ১৪ সপ্তহে ২য় বার হবে,পাখনায় সুচ দিয়ে খুচিয়ে (নন এটিউনেটেড লাইভ ভাইরাস)।টিকা দেয়ার জায়গায় ১টি পক লেশন হয় যা থেকে বুঝা যায় টিকা কাজ করছে, নুরগিতে এটি ৫-৭ দিন পর আর টার্কিতে ৮-১০দিন দেখা যায়।
১০-১৪ দিন পর প্রতিরোধ শক্তি তৈরি হয়।একবার আক্রান্ত হলে আজীবন ইমোনিটি থাকে(হিউমোরাল এবং সেল মেডিয়েট)
বায়োসিকিউরিটি মেনে চলতে হবে।টিকার কার্যকারিতা ৭০-৮০ %।
এই টিকা ক্রস প্রটেকশন দেয় মানে এই স্ট্রেইনের টিকা অন্য স্ট্রেইনের বিরুদ্ধে কাজ করে।অসুস্থ মুরগিকে কালিং করে দিতে হবে এবং মৃত মুরগি মাটিতে পুতে ফেলতে হবে।ভ্যাক্সিন কোন ভাবেই যাতে ফ্লোরে বা লিটারে না পড়ে,ভ্যাক্সিন দেয়ার পর ভায়াল মাটির নিচে বা পুড়িয়ে ফেলতে হবে।
টিকার ধরণঃ
পিজিয়ন পক্স ভ্যাক্সিন
রিকম্বিনেট ভ্যাক্সিন রানিক্ষেত বা মেরেক্স এর সাথে
পক্স লাইভ ভ্যাক্সিন
টিস্যু কালসার ভ্যাক্সিন
এন্ডেমিক এরিয়ায় টিস্যু কালসার ভ্যাক্সিন ৫দিন,৬ সপ্তাহে আবার রিপিড করতে হবে।
Fowl pox vaccine( Non attenuated live) টিকার কিছু খারাপ দিক আছে যেমন টিকা নিজেই পক্স নিয়ে আসতে পারে।Fowl pox vaccine( attenuated live) এটা ১দিন বয়সে ও দেয়া যায়।তাছাড়া মেরেক্সের সাথ দেয়া হয়।Fowl pox and pigeon pox vaccine are not cross protective.
পিজন পক্স ভ্যাক্সিন মুরগি,পিজন এবং টার্কিতে দেয়া যায় কিন্তু ফাউল পক্স পিজনকে দেয়া যায় না।পিজন পক্স ভ্যাক্সিন ১দিন বয়সে ও দেয়া যায়,২য় ভ্যাক্সিন ৪ সপ্তাহে।(Non attenuated live vaccine.)Fowl pox vaccine টার্কিতে দেয়া যায়।