মুরগির কলেরা:বিস্তারিতঃটাইফয়েড ও এ আই থেকে কিভাবে আলাদা করা যায়ঃ
এটি মুরগির মারাত্মক সংক্রামক রোগ যা তীব্র(একিউট) এবং ক্রনিক দুই ধরনের হয়,হাই মর্বিডিটি এবং মর্টালিটি,সাথে ডায়রিয়া থাকে।
এটি গ্রাম নেগেটিভ পাস্টূরেলা মাল্টোসিডা নামক ব্যাক্টেরিয়া দিয়ে হয়,এটিকে এভিয়ান হেমোরেজিক সেপ্টিসেমিয়া বা এভিয়ান পাস্টোরেলোসিস নামে ডাকা হয়।
Mailet ১৮৩৬ সালে ফাউল কলেরা শব্দ ব্যবহার করেন।
১৮৮০ সালে বিজ্ঞানী লুই পাস্তুর এটি আবিষ্কার করেন এবং ১৮৮১সালে ব্যাক্টেরিয়া কে এটিনিউটেড করেন কলেরা টিকা বানানোর জন্য।
এপিডেমিওলজিঃ
এজেন্টঃ
কলেরা করে এমন সেরোটাইপ আছে ১৩টি তার মধ্যে ১,৩,৩x৪ বেশি দেখা যায়।
এর এন্টিজেনিক মেকআপ বিভিন্ন ধরনের তাই টিকা ভাল কাজ করেনা ।
এটি গ্রাম নেগেটিভ,ক্যাপ্সুলেটেড,বাইপোলার নন মোটাইল,ননস্পোর ফর্মিং।এটি এরোবিক ও এনারোবিক ২মিডিয়াতেই দরকার।
সাইজ 0.2-.3*.6-2.6micro m.
capsulated strain are highly virulent and non capsulated strain are low virulent.
১৬টি সোমাটিক সেরোটাইপ আছে তবে ১৩টি মুরগিতে রোগ তৈরি করে।৫টি ক্যাপ্সোলার সাব টাইপ(ইমোটাইপ/সেরোটাইপ)
সর্বোত্তম পি এইচ ৭.২-৭.৮
পেনিসিলিন এন্টিবায়োটকের প্রতি রেজিস্ট্যান্ট।
এটি বিষ্টার মধ্যে ১মাস,মৃতদেহে ৩ মাস ও মাটিতে ২-৩ মাস বেচে থাকে।
১% ফরমাল্ডিহাইড,০.১% সোডিয়াম হাইডোক্সাইড,১% ফেনল,১% কস্টি সোডা,সূর্যের আলো,তাপে,আধুনিক ডিশইনফেক্ট্যান্ট,শুকনা পরিবেশে সহজেই মারা যায়।
সারা পৃথিবীতে দেখা যায়,স্পোরাডিকেলি,ইপিজোটিক বা( মহামারী)ব্যাপক হারে।
মর্টালিটি ও মর্বিডিটি ১০০%।
হোস্টঃ
১৬ সপ্তাহের নিচে হয়না।মুরগি থেকে টার্কিতে বেশি হয়,কোয়েল,রাজহাস এবং হাঁসেও হয়।টার্কির ক্ষেত্রে যে কোন বয়সে হতে পারে( Geese),waterfowl are more susceptible.স্তন্যপায়ীদের রোগ সৃষ্টিকারী টাইপ পোল্ট্রিতে রোগ তৈরি করেনা তবে শুকরে যে টাইপ রোগ সৃষ্টি করে তারা আবার পোল্ট্রিতে রোগ তৈরি করে।
ইঙ্কোবেশন পিরিয়ড ৫-৮ দিন।সুস্থ হয়ে গেলেও ক্যারিয়ার হিসাবে কাজ করে এবং বিস্টার সাথে জীবাণু ছড়িয়ে থাকে।একবার ফার্ম আক্রান্ত হলে রিপিট হতে পারে।
মর্বিডিটি ১০-৮০%।টার্কিতে মর্টালিটি ৯০-১০০%, মুরগিতে ০-২০% বা বেশি,হাসের ক্ষেত্রে ৪সপ্তাহের পর দেখা যায় এবং মৃত্যহার ৫০%।শুকর এবং রেকন রোগের কেরিয়ার হিসেবে কাজ করে এবং প্রায় ১০০ প্রজাতির পাখি প্রাকৃতিকভাবেই কেরিয়ার হিসেবে কাজ করে।মৃত বা অসুস্থ মুরগিকে ঠোকরালে বা মৃত মুরগিকে এখানে সেখানে ফেলে দিলে রোগ ব্যাপক হারে ছড়িয়ে পড়ে।এটি মহামারী আকারেও দেখা দেয়।
রোগটি ভাল হতে ২সপ্তা পর্যন্ত লাগতে পারে,কোন কোন সময় সময় ক্রনিক হয়ে কয়েক মাস মুরগি মারা যেতে পারে।
পরিবেশঃ
সিজনাল পরিবর্তনের সময় বেশি হয় তাছাড়া স্টেস কন্ডিশনে হয়ে থাকে।
বরষা্কালে ও গরমের শেষের দিকে বেশি তবে শীতকালে ও দেখা যায় ।
কখন ও কখন ও এটি মহামারী আকারে দেখা যায়।
পুর স্যানিটেশন,কৃমির লোড,অপুস্টি এবং অন্য রোগ কলেরা রোগ হতে সাহায্য করে।
পানিতে যে সব পাখি থাকে তাদের দ্বারাই রোগটি বেশি বিস্তার লাভ করে কারণ জীবানূটি পানিতে বেশি থাকে।
কিভাবে ছড়ায়ঃ
জীবানূযুক্ত পানিঁ ও খাবার খেলে।
ইদুর,তেলাপোকা,কুকুর,বিড়াল,পোকামাকড় ও বাহিরের পাখি সেডে প্রবেশ করলে।অল্প জায়গায় বেশি মুরগি পালন করলে।আক্রান্ত মুরগি সেডে রেখে দিলে তা বাতাসের মাধ্যমে ছড়ায় এবং সুস্থ মুরগি যদি ঠোকর দেয়।খাবারের বস্তা,ক্রেটস,জুতা এবং যন্ত্রপাতির মাধ্যমে রোগ ছড়ায়।যানবাহন ও যন্ত্রপাতি দ্বারা(খাবার ও পানির পাত্র ,ট্রে)ক্ষতস্থান বা চোখ দিয়ে।ভিজিটরের জুতা ও পোষাক।খাবার পাত্র ও পানির পাত্র এবং ডিমের ট্রে।অসুস্থ মুরগি না,মুখ এবং কংজাংটিভা দিয়ে ছড়ায়।
প্যাথোজেনেসিসঃ
মুখ বা নাক দিয়ে জীবানূ ঢুকে এবং তা পেঠের ভিতর গিয়ে ডায়রিয়া ও অন্যান্য সমস্যা তৈরি করে।টার্কির ক্ষেত্রে শ্বাসনালীতে বেশি সমস্যা করে।মুরগির ক্ষেত্রে মুখ দিয়ে পরিপাক তন্ত্রে যায় এবং ডায়রিয়া করে।প্রায় সব গুলো সিস্টেম আক্রান্ত করে।শ্বাসনালী,পরিপাক,প্রজনন তন্ত্র।সেপ্টিসেমিয়া,এন্ডোটক্সিন,ইডিমা,হেমোরেজিক শক ডেথ হয় ব্যাক্টেরিমিয়া হয়।সিস্টেমিক এবং লোকাল ২ ধরণেরই হয়।
লক্ষণঃ
পার একিউটঃকোন লক্ষণ ও লেসন পাওয়া যায় না।এক জায়গায় মরে পড়ে থাকে।
তীব্রঃ(একিউট)
সেপ্টিসেমিয়া,এন্ডোটক্সিন,ইডিমা,হেমোরেজিক শক ডেথ
ব্যাক্টেরিমিয়া,কোন কারণ ছাড়াই হঠাত মারা যায়,মর্টালিটি তাড়াতাড়ি বাড়তে থাকে।কোন লক্ষণ ছাড়াই লাফ দিয়ে মারা যায়।রাতে বেশি মারা যায়।খাবার খায়না(এনোরেক্সিয়া),সায়ানোসিস,নাক এবং মুখ দিয়ে মিউকাস (লালা) বের হয়।তাপমাত্রা বেড়ে যায় ও ঝিমাতে থাকে।প্রথমে সাদা পানির মত এবং পরে সবুজ মিউকয়েড ডায়রিয়া হয়।পায়খানায় প্রচুর গন্ধ হয়।ঝুটি,কানের লতি ও গলার ফুল ফোলে যায় ও নীল রং ধারণ ক্তে পারে। গ্রানোলোমেটাস ডার্মাটাইটিস ইন পিজন।
মাইল্ড বা মৃদুঃ
শ্বাসকষ্ট,খাবার কম খায় ও ওজন কমে যায়।ঘাড় ঘুরিয়ে পিছনে পিঠের উপর রাখে(ট্ররটিকোলিস ।মেনিঞ্জিয়াল ইনফেকশন)
ঝুটি ও ওয়াটল সবুজ হয়।অল্প মারা যায়।ডিম কমে যায়।
ক্রনিকঃ
প্রায়ই ক্রনিক রুপ দেখা যায়,জয়েন্ট,ফুট পেড,ওয়াটল ফুলে যায় কংজাংটিভাল বা ইনফ্রাঅরভিটাল সাইনাসে পনিরের মত বস্তু দেখা যায়।
টরটিকোলিস দেখা যায়,মিডল ইয়ারে ইনফেকশন হয় যা টার্কিতে দেখা যায়।Purulant arhitistis.lameness.
পোস্ট মর্টেমঃ
একোট না ক্রনিক বা সেভিয়ারিটির উপর লেশন নির্ভর করে,তীব্র হলে লেশন পাওয়া নাও যেতে পারে।হার্টের বেস এ,গিজার্ড এর মিউকাসে,প্রভেন্টিকোলাসে এবং এবডোমিনাল ফ্যাট এর উপর পেটেসিয়াল এবং একাইমোটীক রক্ত দেখা যায়,
আপার ইনটেস্টাইন ফুলে যায় এবং রক্ত বর্ণ হয় (Generalized hyperremia of upper intestine),ক্ষুদ্রান্তে ঘা দেখা যায়।প্রভেন্টিকোলাসে চিজি এক্সুডেট দেখা যায়।
Sub epicardial and subserosa hemorrhage,conjunctivitis,conjested breast.caseous exudate in mouth
Acute lesions developed by intravascular coagulation)
পেরিটোনি্যাম ক্যাভিটিতে মুক্ত ওভা(Free Yoik এগ পেরিটোনাইটিস) পাওয়া যায়,ওভাতে প্রদাহ হয়(Oophoritis,regressing and hyperemic follicles) এবং পেরিটোনাইটিস হয়।লিভার বড় হয় এবং কালচে রং ধারণ করে(Congested।(yellow brown)
স্প্লীন ও কিডনি বড় হয়।মুখে ইডিমা দখা যায়।ক্রনিকের ক্ষেত্রে লোকাল প্রদাহ দেখা দেয়।যেমন জয়েন্ট,ওয়াটল (exudate)ইনফ্রাঅরভিটাল সাইনাস,কংজাংটিভাল স্যাক।
টার্কির ক্ষেত্রে ফুসফুস শক্ত হয়ে যায়(Consolidation)।ক্লোয়েকায় রক্ত দেখা যায়
রোগ নির্ণয় পদ্ধতিঃ
সিস্ট্রি নিয়ে
লক্ষণ দেখে
পোস্ট মর্টেম
ইমোনোফ্লোরোসেন্ট মাইক্রোস্কোপের মাধ্যমে
এলাইজা টেস্ট
জীবাণু কালসার করে।
প্রিভেন্টশন এবং কন্টোলঃ
ক।বায়োসিকিউরিটি এবং হাইজিন
সকল ক্যারিয়ার মানে পাখি এবং মানুষ থেকে মুক্ত রাখতে হবে।
মৃত বা অসুস্ত মুরগি কুকুর,বিড়াল শিয়াল থেকে দূরে রাখতে হবে।
ফার্ম এলাকা পরিস্কার রাখতে হবে যাতে ইদুর বা অন্য কোন প্রাণি যাতে না আসে।
প্রতিদিন লাইট বন্ধ করার আগে খাবার ও পানির পাত্র পরিস্কার করতে হবে যাতে খাবার খাওয়ার জন্য কেউ না আসে।
মুরগি মারা গেলে সাথে সাথে পুতে ফেলতে হবে।
পরিস্কার খাবার ও পানি দিতে হবে।
খ।টিকাঃ
লাইভ এবং কিল্ড ২ ধরনের পাওয়া যায়।
এডভান্সের টিকা
১ম টিকা ৯ সপ্তাহে কিল্ড মাংসে বা চামড়ায় .৫ মিলি
ব্রুস্টার ১৪ সপ্তাহে কিল্ড ।
লাইভ টিকা ৬ সপ্তাহের দিকে দিতে হয় ;
চিকিৎসাঃ
স্যালাইন (কলেরা স্যালাইন,হাইড্রেট,রেনালাইট,এসিলাইট,ইলেক্টোপ্যাক এর যে কোন একটি তবে কলেরা স্যালাইন বেশি ভাল) ৭ দিন ১ বেলা
লিভারটনিক (রেস্টোলিভ,হেপামিন,হেপারেনল) ৫ দিন সকালে
ইমোনোস্টিমোলেটর( বেটামিউন,লাইসোভিট) ২-৪দিন
কফ বা শ্বাস কষ্ট থাকলে (পালমোকেয়ার,কফনিক্সা বা ব্রংকোবেট) ৪-৫ দিন
এন্টিবায়োটিক
সালফার ড্রাগঃ
কসুমিক্স বা ইরাইভেট বা ইরোকট বা মাইক্রোনিড) ৫-৭ দিন। বা
জেন্টামাইসিন +ক্লোইনোলন ৭দিন।
জেন্টা (.2ml muscle 3-4day) বা অক্সিটেট্রাসাইক্লিন ( 0.5ml muscle 2days interval) ইঞ্জেকশন লাগতে পারে।
টাইফয়েড ও কলেরার মধ্যে পার্থক্যঃ
টাইফয়েড কলেরা
যে কোন বয়সে হয় ১৬ সপ্তাহের পর হয়
শ্বাস প্রশ্বাস স্বাভাবিক অস্বাভাবিক হতে পারে
লিভার ব্রোঞ্জ কালার সাদা দানাদার সহ লাল
পায়খানা গন্ধ কম গন্ধ বেশি
হার্টে হেমোরেজ হয় না হয়
এবডোমিনাল হেমোরেজ হয় না হয়
প্রভেন্টীকোলাসে এক্সুডেট হয় না হতে পারে
কলেরা এবং এ আই এর মধ্যে পার্থক্যঃ
কলেরা এ আই
১৬ সপ্তাহের পর হয় যে কোন বয়্স হয়
হার্ট এবং এবডোমিনাল ফ্যাটে রক্ত ট্রাকি্যাতে রক্ত এবং এয়ারস্যাক আক্রান্ত হয়
মাসলে হেমোরেজ হয় না হতে পারে(৫ হলে)
লিভার বড় এবং সাদা দানাদার দাগ গুরুত্বপূর্ণ নয় এইচ ৯ কিন্তু এইচ ৫ লিভার ড্যামেজ হয়।
ডিম কমে ডিম বেশি কমে
আপার ইন্টেস্টাইনে লাল হয় এবং স্লাইমি বস্তু দেখা যায়- দেখা যায়না
ক্ষুদ্রান্তে জটিলতা বেশি শ্বাস তান্ত্রিক জটিলতা মেইন
ক্রনিক ক্ষেত্রে কম্ব ও ওয়াটলে সেলোলাইটিস হয়। নেক্রোসিস অফ স্কিন,কম্ব,ওয়াটল।
ঝুটি ও শ্যাংকে হেমোরেজ হয় না হতে পারে(৫ হলে)
মর্টালিটি 0-২0 ০-১০০%
গরমে ও বর্ষায় বেশি হয় শীতে বেশি হয়
অনেক সময় মিক্স ইনফেকশন হয়,সাথে টাইটার কম বা রানিক্ষেত বা এ আই বা আই বি থাকে তাই মর্টালটি বেশি হয় ১০-৬০% হতে পারে।
আর কলেরা,রানিক্ষেত বা এ আই আলাদা করা কঠিন তাই টেস্ট করে আলাদা করতে হবে,কি রোগ ।
ফিল্ডে মুরগিতে কলেরার শ্বাসতান্ত্রিক জটিলতা তেমন দেখা যায় না।এটা মেইনলি টার্কিতে হয়।








Please follow and like us: