Breaking News

ভেটেরিনারিয়ান বিজন_কুমার_শীল করোনা ভাইরাস এর কীট আবিষ্কারক: কোভিট ১৯ এবং টেস্ট নিয়ে আলোচনা

/#বিজন_কুমার_শীল করোনা ভাইরাস এর কীট আবিষ্কারক।
#জন্মেছিলেন_কৃষক_পরিবারে
নাটোরের বড়াইগ্রাম উপজেলার বনপাড়ায় ১৯৬১ সালে জন্ম বিজন কুমার শীলের। অকপটেই স্বীকার করেন ‘আমি কৃষক পরিবারের ছেলে। আমার বাবা ছিলেন কৃষক। বাবার সঙ্গে মাঠেও কাজ করেছি দীর্ঘদিন।’ বাবা রসিক চন্দ্র শীল ও মা কিরণময়ী শীলের ২ ছেলে ও ৪ মেয়ের মধ্যে পঞ্চম বিজন। বনপাড়ার সেন্ট যোসেফ হাইস্কুল, পাবনার সরকারি এডওয়ার্ড কলেজ হয়ে ভর্তি হন ময়মনসিংহের বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে। সেখানে স্নাতক হন ভেটেরিনারি সায়েন্স বিষয়ে। ফলাফল ছিল প্রথম শ্রেণিতে প্রথম। একই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি নেন অণুজীববিজ্ঞানে।
কমনওয়েলথ বৃত্তি নিয়ে যুক্তরাজ্যে যান। সেখানে দ্য ইউনিভার্সিটি অব সারে থেকে ১৯৯২ সালে পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেন। তাঁর গবেষণার বিষয় ছিল শরীরের রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানো নিয়ে (ডেভেলপমেন্ট অব মনোক্লোনাল অ্যান্টিবডিজ)। সেই থেকে বিজন কুমার শীলের অণুজীববিজ্ঞান বিশেষ করে ভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকানোর গবেষণা আর থেমে থাকেনি। অণুজীববিজ্ঞান নিয়ে ১৪টি উদ্ভাবনের পেটেন্ট রয়েছে বিজন কুমার শীলের নামে। পৃথিবীর শীর্ষস্থানীয় জার্নালগুলোতে ২০টির বেশি গবেষণাপত্র প্রকাশিত হয়েছে, ২০টির বেশি আন্তর্জাতিক বৈজ্ঞানিক সম্মেলনে গবেষণা প্রবন্ধ উপস্থাপন করেছেন। বিজন কুমার শীলের স্ত্রী অপর্ণা রায় একজন প্রাণী চিকিৎসক। তাঁদের এক ছেলে ও এক মেয়ে।
#কর্মজীবন
ড. বিজন কুমার শীল সিংগাপুর জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে কিছুকাল শিক্ষকতা করেন। এরপর ঐ চাকরি ছেড়ে জয়েন করেন এমপি নামক একটা বায়োলজিকস আমেরিকান কোম্পানিতে, ওটার মালিক ছিলেন যুগোস্লাভিয়ার একজন প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি। এরপর নিজেই বায়োলজিক্যাল রিয়েজেন্ট তৈরি ও ব্যবসা শুরু করেন। সম্প্রতি তিনি গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রে যোগ দেন মাইক্রোবায়োলজি ডিপার্টমেন্টে। সেখানে তিনি শিক্ষকতার পাশাপাশি মনোযোগ দেন গবেষনায়।
#করোনাভাইরাস সনাক্তকরণের_পদ্ধতি আবিষ্কার
২০০৩ সালে যখন সার্স ভাইরাসের সংক্রমণ দেখা দিয়েছিল তখন বাংলাদেশি বিজ্ঞানী ড. বিজন কুমার শীল সিঙ্গাপুর গবেষণাগারে কয়েকজন সহকারীকে নিয়ে সার্স ভাইরাস দ্রুত নির্ণয়ের পদ্ধতি আবিষ্কার করেন। ড. বিজন কুমার শীলের নেতৃত্বে ড. নিহাদ আদনান, ড. মোহাম্মদ রাঈদ জমিরউদ্দিন ও ড. ফিরোজ আহমেদ এই পদ্ধতি উদ্ভাবন করেছেন। ‘র‌্যাপিড ডট ব্লট’ পদ্ধতিটি ড. বিজন কুমার শীলের নামে পেটেন্ট করা। পরে এটি চীন সরকার কিনে নেয় এবং সফলভাবে সার্স মোকাবেলা করে। উল্লেখ্য, তার আগে ১৯৯৯ সালে ছাগলের মড়ক ঠেকানোর জন্য পিপিআর ভ্যাকসিন আবিষ্কার করেছিলেন তিনি।
সিঙ্গাপুরেই গবেষণা করছিলেন ডেঙ্গুর ওপরে। গবেষণা চলাকালে তিনি দুই বছর আগে গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রে যোগ দেন। সম্প্রতি ফের বিশ্ব যখন করোনা ভাইরাসের সংক্রমণে বিপর্যস্ত তখন এ অনুজীববিজ্ঞানী মনযোগ দেন করোনা শনাক্তকরণ কিট উদ্ভাবনে এবং খুব তাড়াতাড়ি সফলতার মুখ দেখেন। গণস্বাস্থ্য র‌্যাপিড ডট ব্লট (জি র‌্যাপিড ডট ব্লট) নামের এই কিট তৈরির দলে আরও যে কজন অণুজীববিজ্ঞানী রয়েছেন তাঁরা হলেন নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের অণুজীববিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. ফিরোজ আহমেদ, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অণুজীববিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. নিহাদ আদনান, ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের অণুজীববিজ্ঞান বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ রাশেদ জমিরউদ্দিন এবং আইসিডিডিআরবির বিজ্ঞানী ড. আহসানুল হক।
তাঁদের এই গবেষণাকাজ সমন্বয় করেন গণস্বাস্থ্য সমাজভিত্তিক মেডিকেল কলেজের উপাধ্যক্ষ ডা. মহিবুল্লা খন্দকার। সার্বিক তত্ত্বাবধানে আরও ছিলেন গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা বীর মুক্তিযোদ্ধা ডা. জাফরুল্লাহ। বিদেশ থেকে আমদানি করলে এ কিটের দাম পড়ত ৪-৫ হাজার টাকা মত। সেখানে তাদের উদ্ভাবিত কিটের দাম পড়বে মাত্র তিন থেকে চারশ টাকার মধ্যে।
অধ্যাপক ও বিজ্ঞানী বিজন কুমার শীল আমাদের হিরো আমাদের দেশের গর্ব।শ্রদ্ধা জানাই তার প্রতি এবং তার সহযোদ্ধাদের।
তথ্যসূত্র : উইকিপিডিয়া

###

Jewel Abrar 

 ৯০-এর দশকে বিজ্ঞানী বিজন শীল ব্ল্যাকবেঙ্গল প্রজাতির ছাগলের সংক্রামক রোগের ভ্যাকসিন আবিষ্কার করেন। ২০০২ সালে তিনি ডেঙ্গুর কুইক টেস্ট পদ্ধতি আবিষ্কার করেন। ২০০৩ সালে তিনি সার্সের কুইক টেস্ট পদ্ধতি আবিষ্কার করেন যা করোনা ভাইরাস এর পূর্বসূরী। দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ায় সার্স প্রতিরোধে যে ক’জন বড় ভূমিকা রেখেছেন, ড. বিজন শীল তাদের একজন। সার্স প্রতিরোধ তিনি সিঙ্গাপুর সরকারের বিজ্ঞানী হিসেবে কাজ করেছেন। ১৯৯৯ সালে ছাগলের মড়ক ঠেকানোর জন্য তিনি পিপিআর এবং আফলা টক্সিন এর প্রতিশেধকও দেশীয় পদ্ধতিতে আবিষ্কার করে প্রান্তিক খামারীদের আশার মুখ দেখিয়েছেন। অণুজীববিজ্ঞান নিয়ে ১৪টি উদ্ভাবনের পেটেন্ট রয়েছে বিজন কুমার শীলের নামে।যে লোক ভেক্সিন আবিষ্কার করতে পারে, যেই লোক সবসময় শুধু দেশের কথা ভাবে তার জন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর ভাবতে হবে এই লোকটাকে কারা ছোট করতে চাইছে, তাদের কি উদ্দেশ্য, আমার দেশকে কেন বড় করে সারা বিশ্বে মাথা উঁচু করতে দিবে না। সরকারের উচিৎ উনার উদ্ভাবনী করোনা টেস্ট এর কিট আপনারা পরিক্ষা করে দেখেন যদি সাকসেস হয় তাহলে তো বিশাল ব্যাপার, আর যদি না হয় তাহলে বাদ, কিন্তু যুদ্ধে যাওয়ার আগেই পরাজয় মেনে নেওয়া যাবে না।

কোভিড-১৯ টেস্টিং-এ বাংলাদেশ এত পিছিয়ে কেন?

ভ্যাকসিন আবিস্কারের পূর্বে করোনা ভাইরাস মোকাবেলায় টেস্টিং এর কোন বিকল্প নেই। ভ্যাক্সিন আবিষ্কার হলেও তার কার্যকারিতা কতটুকু ফলপ্রসূ হবে সেটাও প্রশ্ন সাপেক্ষ।

ভাইরোলজির ছাত্র না হলেও আমি যতটুকু বুঝেছি করোনা ভাইরাসের রিপ্রডাকশনের ক্ষেত্রে উৎপাদিত ভাইরাসগুলো একই প্রজাতির মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকতে পারে আবার মিউটেশন প্রক্রিয়ায় অন্য কোন প্রজাতিতেও রূপান্তরিত হতে পারে। যদি মিউটেশন করেই তাহলে সেক্ষেত্রে অলরেডি ডিস্কোভারড অন্য প্রজাতি হতে পারে অথবা সম্পূর্ন নতুন প্রজাতিতে রূপান্তরিত হতে পারে। এই মিউটেশন প্রক্রিয়ায় ভাইরাসটি আগের তুলনায় দুর্বলও হতে পারে আবার সবলও হতে পারে। কিন্তু তাতে সমস্যা নয় যদি সেটা পূর্বেই আবিষ্কৃত প্রজাতিগুলোর মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকে। কারন বিজ্ঞানীরা করোনা ভাইরাসের সম্ভাভ্য সব প্রজাতিকেই টার্গেট করেই ভ্যাক্সিন তৈরি করেন। কিন্তু সমস্যা বাঁধে যদি ভাইরাসটি মিউটেশন প্রক্রিয়ায় সম্পূর্ন নতুন প্রজাতি সৃষ্টি করে। সেই ক্ষেত্রে ভ্যাকসিনটি সব ক্ষেত্রে কার্যকরি নাও হতে পারে। গবেষকরা করোনা ভাইরাসের জেনেটিক এনালাইসিস ও ট্রেসিং করে ইতোমধ্যেই তার প্রমাণ পেয়েছেন। তারা সাম্প্রতিক র‍্যান্ডমলি সিলেক্টেড ১১ জন করোনা আক্রান্ত রোগীকে পরীক্ষা করে ৩৩ ধরনের মিউটেশন পেয়েছেন যার মধ্যে ১৯ টি সম্পূর্ন নতুন প্রজাতি। তারমানে হল ইতিমধ্যেই আবিষ্কৃত ভ্যাক্সিন চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন।

তো সে কারনেই বিশ্ব স্বাস্থ সংস্থা প্রথম থেকেই বলে এসেছে টেস্টিং, টেস্টিং এন্ড টেস্টিং। কারন উপযুক্ত ভ্যাক্সিন না হলে একে নির্মূলের কোন পথ নেই সেক্ষেত্রে একে নিয়ন্ত্রনে রেখেই মানবজাতিকে আগাতে হবে। নিয়ন্ত্রনের ক্ষেত্রে কমপ্লিট লকডাউন কোন স্থায়ী অথবা ভায়াবল সল্যুশন নয়। আর নিয়ন্ত্রনের মোট চারটি ধাপ যেটা 4T নামে পরিচিত। প্রথমেই টেস্টিং, তারপর ট্র‍্যাকিং, এরপর (কন্ট্রাক্ট) ট্রেসিং, সবশেষে ট্রিটমেন্ট।

এই পদ্ধতি অনুসরণ করে আগেই সাফল্য পেয়েছে দক্ষিণ কোরিয়া, তাইওয়ান, ভিয়েতনাম। সাম্প্রতিককালে এর সবচেয়ে বড় উদাহরণ হচ্ছে জার্মানি। তারা সম্পূর্ন লকডাউন করে অর্থনিতিকে অচল করেনি। বরং তারা এক্ষেত্রে সেই 4T মেথডকেই প্রাধান্য দিয়েছে এবং সাফল্য পেয়েছে। এই প্রক্রিয়ায় যুক্ত হয়েছে তুরস্কও।

জার্মানি প্রতিদিন প্রায় ১ লক্ষ বিশ হাজার কোভিড-১৯ টেস্ট করছে। তুরস্ক করে প্রায় ৪০ হাজার। অনেকেই হয়তো জানিনা, তুর্কিতে এখনো কোন সরকারী ছুটি ঘোষিত হয়নি। সেখানে ইতিমধ্যে অনেক আক্রান্ত হলেও আর্লি টেস্টিং করে তুর্কি ইনফেকশনের রেট নিম্নগামী করতে সক্ষম হয়েছে।

জার্মানিতো আরেক ধাপ এগিয়ে। তারা কোভিড-১৯ টেস্টিং এর পাশাপাশি তারা গনভাবে কোভিড এন্টিবডি টেস্টিং-এ হাত দিয়েছে। উদ্দেশ্য অর্থনিতিকে আরো সচল করা।

আমরা ইতিমধ্যেই হয়ত জানি যে অধিকাংশ করোনা রুগী যাদের ইমিউন সিস্টেম খুব শক্তিশালী তারা কোন সিম্পটম ছাড়াই অর্থাৎ অসুস্থ হওয়া ছাড়াই ভাল হয়ে যায়। এক্ষেত্রে তাদের বডিতে যে এন্টিবডি তৈরি হয় সেটা অনেকটা ন্যাচারাল ভ্যাক্সিনের কাজ করে। তো এই জাতীয় মানুষদের রেস্ট্রিকটেড করে অর্থনিতির ক্ষতি করার কোন মানেই হয় না। জার্মানি সেই কাজটাই করতে চাচ্ছে।

তো কোভিড-১৯ টেস্টিং অথবা কোভিড এন্টিবডি টেস্টিং যেটাই হোক এত বিশাল সংখ্যক অর্থাৎ প্রতিদিন ১ লাখ থেকে ১ লাখ ৫০ হাজার মানুষের টেস্টিং কিভাবে সম্ভব? যেখানে বাংলাদেশ প্রতিদিন গড়ে ৩/৪ হাজারের বেশি টেস্ট করতে পারছে না।

এর সম্ভাব্য উত্তর হচ্ছে ‘পুল টেস্টিং’। স্বতন্ত্র টেস্টিং-এর তুলনায় একই সময়ে পুল টেস্টিং-এ ৪/৫ গুন বেশি পরীক্ষা করা সম্ভব। এর মাধ্যমে যেমন সময় বাঁচে তেমনি অর্থের অপচয়ও রোধ করা সম্ভব। কারন যতদুর জানি একই টেস্ট কিট দিয়েই এক সাথে এক জনের পরিবর্তে অনেকজনের টেস্ট করা যায় যেটাকে ‘পুল টেস্ট’ বলা হয়।

প্রশ্ন আসতে পারে এটা কিভাবে করে। ধরুন যে এলাকায় মহামারী কম অর্থাৎ মোট টেস্টের ৫-১০% করোনা পজেটিভ পাওয়া গেছে, সেখানকার ১০০ জনকে টেস্টের প্রয়োজন। এই ১০০ জনের নমুনাকে ১০ টি পুলে ভাগ করে প্রত্যেক পুলে ১০ টি করে নমুনা রাখা হল। এখন প্রথমে ১০টি কিট দিয়ে আলাদাভাবে টেস্ট করা হল। দেখা গেল দুটিতে পজিটিভ পাওয়া গেল আর বাকীগুলো নেগেটিভ। তারমানে এর মাধ্যমে প্রথমেই ৮০% রোগীকে করোনামুক্ত ঘোষণা করা সম্ভব। বাকী দুটি পুলের বিশ জনের অবশিষ্ট নমুনাগুলো নিয়ে ইন্ডিভিজ্যুয়ালি অর্থাৎ আলাদাভাবে টেস্ট করা সম্ভব।

আমার জানামতে বাংলাদেশ এখনো চিরাচরিত ‘ইন্ডিভিজ্যুয়াল টেস্টিং’ পদ্ধতিই ফলো করছে। যার কারণে টেস্টের সংখ্যা এত কম, তাই করোনা রোগীও কম। এখন পর্যন্ত বাংলাদেশে টেস্টিং সংখ্যা সর্বসাকুল্যে ৩৫ হাজারের কাছাকাছি। অথচ পাকিস্তানের সংখ্যাটা প্রায় দেড় লাখ। সাম্প্রতিককালে ভারত, পাকিস্তানও এই পদ্ধতি ফলো করছে। গত সপ্তাহ থেকে আমাদের পাশে পশ্চিমবঙ্গেও শুরু হয়েছে।

বাংলাদেশে এখনো কেন পুল টেস্টিং শুরু করেনি তার সম্ভাব্য কারন হতে পারেঃ এক, যাতে করোনা আক্রান্ত সংখ্যাটা ইচ্ছা কঅরে কম দেখানো যায়। দুই, টেস্টিং কিটের সংখ্যা কমালে দুর্নীতি করার সুযোগটা কমে যায়। কোনটা সত্যি আল্লাহ ভালো জানেন।

###

Dr  Mohammad Anisuzzaman

গুজব না বিজ্ঞান !
COVID-19 রোগ কি ব্রয়লার মুরগীর মাংস বা গবাদি প্রাণি থেকে মানুষে ছড়ানোর কোন সম্ভবনা আছে ?
– না কোন সম্ভবনা নেই ।
COVID-19 রোগ সৃস্টিকারী ভাইরাসের অফিসিয়াল নাম ‘SARS-CoV-2’ ভাইরাস । ভাইরাসটি মানুষ থেকে মানুষে ছড়ায় শ্বাসপ্রশ্বাস বা হাঁচি-কাশিতে সৃস্ট ড্রপলেট বা এরোসলের মাধ্যমে, SARS-CoV-2 ভাইরাস দ্বারা সংক্রমিত একজন মানুষই অন্য মানুষকে সংক্রমন করার একমাত্র মাধ্যম । তাই, গরু-ছাগল, হাঁস-মুরগীর মাধ্যমে SARS-CoV-2 ভাইরাস মানুষে সংক্রমন হওয়ার কোন সুযোগ নেই ।
একটি প্রশ্ন সবার মনে আসতে পারে, SARS-CoV-2 ভাইরাস তো প্রথমে প্রাণিদেহ থেকেই মানুষে এসেছে তাহলে এখন কেন বলা হচ্ছে গবাদি প্রাণি থেকে মানুষে আসার কোন সম্ভবনা নেই ? একথা সত্যি, SARS-CoV-2 ভাইরাস প্রথমে প্রাণি থেকেই মানুষে এসেছে কিন্তু সেটি ছিল একটি বিরল বিবর্তনীয় ঘটনা । এ ভাইরাসের জিনোম সিকোয়েন্সের তথ্য নিয়ে সাম্প্রতিক গবেষণায় দেখা গেছে এরা মানব দেহকেই প্রধান পোষক হিসেবে বেছে নেয়ার জন্য বিবর্তিত হতে অনেক সময় নিয়েছে যাকে বলে ‘natural selection in human’ (রেফারেন্স-১) । গবেষণায় আরো পাওয়া গেছে, ভাইরাসটির আদিপুরুষ বসবাস করত বাদুড় এবং বনরুই (Pangolins) জাতিয় প্রাণিতে, চিনের উহান প্রদেশে মানুষ কর্তৃক বন্যপ্রাণি ভক্ষনের ফলস্বরুপ দুর্ঘটনাবশত বন্য প্রাণিতে থাকা করোনাভাইরাস মানবদেহে প্রবেশ করে এবং খুব অলৌকিকভাবে দ্রুত বিবর্তনের মাধ্যমে বন্যপ্রাণি থেকে আসা ভাইরাসটি তার রূপ পরিবর্তন করে ভয়াবহ এক নতুন রূপ ধারণ করে যা এক মানুষের দেহ থেকে আরেক মানুষের দেহে প্রবেশের কৌশল রপ্ত করে (রেফারেন্স-১ ও ২)। মানব দেহে স্থায়ী বসবাস শুরুর পর থেকে এ ভাইরাসের বর্তমান রুপ তার আদি রুপ থেকে আলাদা । এটি যেকোন ভাইরাসের ক্ষেত্রে খুব বিরল একটি প্রাকৃতিক ঘটনা যাকে বলে “Host-Jump” বা “cross species spill-over”, এরপর থেকেই এ ভাইরাসের প্রধান পোষক এখন মানুষ । তাই, একজন সংক্রমিত মানুষই অন্য মানুষে এ ভাইরাস ছড়ানোর প্রধান উৎস, পোল্ট্রি মুরগী বা গবাদি প্রাণি থেকে করোনাভাইরাস মানুষে সংক্রমনের তথ্য সম্পুর্ণ ভিত্তিহীন ।
বাংলাদেশের জন্য করোনা মহামারীর চেয়ে খাদ্য মহামারীর ভয় এখন অনেক বেশী । না জেনে পোল্ট্রি মুরগী আর গবাদী প্রাণি থেকে করোনা ছড়ানোর মত ভয়াবহ যে গুজব ছড়িয়েছি তার পরিনাম আন্দাজ করতে পেরেছি ? দেশের সিংহভাগ মাংসের যোগান আসে পোল্ট্রি থেকে, তাছাড়া প্রায় এক কোটি মানুষের সরাসরি কর্মসংস্থান এ শিল্পের সাথে । মিথ্যা গুজবের কারণে শুধু পোল্ট্রি শিল্পে নয়, ডেইরি সহ অন্যান্য প্রাণি খামারিদের যে ক্ষতি শুরু হয়ে গেছে তা চলতে থাকলে দেশে নেমে আসবে এক ভয়াবহ অর্থনৈতিক বিপর্যয় । অজ্ঞতার কারণে এরকম আরো অনেক গুজব সমাজে মহামারী আকার ধারণ করেছে । করোনা মহামারীতে দেশের আপামর জনতা যেভাবে অসহায় মানুষের পাশে এসে দাড়িয়েছে, একইভাবে এসব গুজব ঠেকাতেও আপনাকে পাশে থাকতে হবে । তা নাহলে, লক্ষ লক্ষ প্রান্তিক খামারী দেউলিয়া হয়ে যাবে যার ভার সবাইকে বহন করতে হবে ।
(প্রিয় Md Zohorul Islam এর Time Line হতে)
…………………………………………………….
রেফারেন্স-১: Andersen, K.G., Rambaut, A., Lipkin, W.I. et al. The proximal origin of SARS-CoV-2. Nat Med (2020).

রেফারেন্স-২: Lam, TT., Shum, M.H., Zhu, H. et al. Identifying SARS-CoV-2 related coronaviruses in Malayan pangolins. Nature (2020).

Dr Muhammad Anisuzzaman

বিষয়ঃ লকডাউন তুলে নেয়া প্রসংগে

COVID-19 অতি দ্রুত বিস্তার-সক্ষম একটি রোগ। যদিও রোগটির Ro (basic reproduction number) খুব বেশি নয় (1.4-5.7) কিন্ত Tp (transmission potential) খুব বেশি। আর Tp বেশি হওয়ার কারণ হিসাবে বলা হয় যে রোগটি Pre-syptomatic, mild symptomatic অথবা asypmtomatic অবস্থাতেও ছড়াতে পারে। যে সকল দেশ প্রচুর টেস্ট করেছে সে সব দেশে ২০-৫০% বা তারও বেশি কেসই ছিল লক্ষণহীন। যেহেতু কোন vaccine এমনকি effective treatment ও নেই, তাই herd immunity develop না করা পর্যন্ত এ super-spreader থামবে না।
অনেকে বলছেন আমাদের দেশে already Pre-syptomatic, mild symptomatic অথবা asypmtomatic অবস্থায় অর্ধেক জনগোষ্ঠিকে infection করে ফেলেছে এবং herd immunity হয়ে গেছে। আর তাই ২৫ তারিখের পর লকডাউন তুলে দেয়া যাবে। আমিও স্বীকার করি হতে পারে। কিন্তু প্রমাণ কই। Herd immunity প্রমাণ করতে লাগবে প্রচুর random, rapid sero-diagnosis এবং এতে যদি দেখা যায় ৫০% এর বেশি infection পেয়েছিল তবে কিছুটা আশ্বস্ত হওয়া যাবে।
পক্ষা্ন্তরে, আমাদের দেশে সবেমাত্র active infection বাড়ছে। এমতাবস্থায়, লকডাউন তুলে নিয়ে জনগণের free movement এর সুযোগ করে দিলে মারাত্বক বিপদ হতে পারে। খুব ভাল treatment facility থাকলে active infection curve flat হলে লকডাউন তুলে দেয়া যায়। অন্যথায় basal level এ না আসা পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে।

বিঃ দ্রঃ
১। দেশের বিজ্ঞ virologist/microbiologist, immunologist, epidemiologist গণের পরামর্শ ছাড়া সিদ্ধান্ত নেয়া ঠিক হবে না।
২। অনেক সময় অপচয় হয়েছে। আর যেন কোন ভুল না হয়। নয় কোন সম্বনয়হীনতা।
৩। অর্থনীতির পুনরোদ্ধার সম্ভব। কিন্তু গণ মৃত্যু যেন শুরু না হয়।
৪। লকডাউন সফল করতে হলে দরিদ্র জনগোষ্ঠীর জন্য অর্থ বরাদ্দ ও তার সুষ্ঠু বণ্টন নিশ্চিত করতে হবে।
৫। জনগণকে আরও সচেতন ও আরও দায়িত্বশীল হতে হবে।

করোনায় করনীয়


প্রথমেই বলে নেই আমি লকডাউন দীর্ঘায়িত করার পক্ষে। কিন্তু লকডাউন হচ্ছে Critically ill রোগীর Emergency management এর মত। লকডাউন, সাধারণ ছুটি কিংবা ‘সারা দেশ করোনা ঝুকিতে আছে’ এলান করে বসে থাকলেই চলবেনা। WHO যেমন বলেছে test, test, ও test… ঠিক তেমনটাই করতে হবে।

আমার ক্ষুদ্র জ্ঞানে মনে হয় symptomatic রোগীর test দরকার মূলত তার proper management এর জন্য। কিন্তু বেশি বেশি test এর মাধ্যমে asymptomatic career detect করে isolation না করতে পারলে এ রোগের গোপন, প্রবল বিস্তার প্রতিরোধ করা সম্ভব নয়। কোন এলাকায় কেউ আক্রান্ত হলে সে Po(Patient zero, প্রথম আক্রান্ত রোগী; ঐ এলাকার সাপেক্ষে) এর আশেপাশে সকল বাড়ি (১০-৪০); কোন কোন ক্ষেত্রে পুরু এলাকা লকডাউন করা হচ্ছে। কিন্তু Po এর অতি নিকট প্রতিবেশীদের মধ্যেও random sampling করে test করা হচ্ছে কি (সম্ভবত শুধু পারিবারিক সদস্যদের মধ্যেই সীমাবদ্ধ)?

Po এর proper magangement অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। Po & তার contacts tracing এবং সবকিছুর সু-সমন্বিত ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে আজ ভিয়েতনাম রুখে দিয়েছে এ মহামারী। অথচ রাষ্ট্র কুল শিরমনী আমেরিকা সময়মত ব্যবস্থা না নিয়ে আজ দিশেহারা। আজ এ শ্রেষ্ঠ জাতি ধুঁকছে, ভুগছে আর দলে দলে মরে প্রমাণ করছে তাদের ভুল ছিল; বড্ড বেশি ভুল ছিল। লকডাউনের সাথে সাথে প্রচুর test না করতে পারলে এ সুনামি ঠেকানো যাবে না। জানি আমাদের resource সীমিত।

RT-PCR দিয়ে সরাসরি ভাইরাস detection এর মাধ্যমে (nucleic acid analysis) active infection এমনকি asymptomatic career detection করা হয়। এতে false positive আসার সম্ভাবনা নেই। কিন্তু stage of infection, type of sample, shipment ও processing এর উপর নির্ভর করে false negative (~৩০%) আসতে পারে। তদুপরি, asymptomatic career ও active infection এ; বিশেষ করে আক্রান্ত হওয়ার প্রথম সপ্তাহের মধ্যে Rt-PCR ই best. কিন্তু যে হারে RT-PCR করা হচ্ছে তাতে এ বিশাল জনগোষ্ঠীর ৫০% কভার করতে করতে হয় এ রোগ থাকবে না; আর না হয় টেস্ট করার মত মানুষ বাকী থাকবে না। আর তাই আমাদের যেতে হবে অধিকতর সুলভ antibody-based rapid sero-diagnosis এ। বাংলাদেশের গণস্বাস্থের Bijon’s kit (যথাযথ যাচাই সাপেক্ষে) এ ক্ষেত্রে ব্যবহার করা যেতে পারে; যার খরচ জন প্রতি 250-300 টাকা এবং নেই আমদানির ঝামেলা।

স্বীকার করছি sero-diagnosis এ false negative ও false positive দুই-ই আসতে পারে। কিন্তু আক্রান্ত হওয়ার দ্বিতীয় সপ্তাহে বা তারপরে ( যখন RT-PCR এর কার্যকারিতা কম) sero-diagnosis এর মাধ্যমে অনেক নির্ভুল ফল (~৯০%) পাওয়া সম্ভব। এছাড়াও এতে herd immunity/social immunity সমন্ধে জানা যাবে।

Sero-diagnosis এর ফলাফলের সাথে বিজ্ঞ ডাক্তারগণ যদি clinical history ও clinical presentation এর সমন্বয় করেন তবে সহজেই বুঝতে পারবেন further evaluation by RT-PCR বা other tools লাগবে কি না। এছাড়াও এখন ভাবতে হবে PoC (point of care; যে খানেই রোগী সেখানেই নির্ণয়)নিয়ে। PoC করতে পারলে স্বাস্থ্যকর্মী ও ডাক্তারগণের risk কমবে। আর স্বাস্থ্যকর্মী ও ডাক্তারগণ নিশ্চয়তা পেলে অনান্য রোগের চিকিৎসা সুনিশ্চিত হবে। ওদিকে ‘মরার উপর খাড়ার ঘা’ ডেঙ্গু কিন্তু আসছে।

সর্বপরি
১। প্রচুর টেস্ট করাতে হবে
২। Sero-diagnosis অতিশীগ্রই চালু করে test number বাড়াতে হবে।
৩। সমন্বিত test ও অধিক test এর মাধ্যমে asymptomatic career, active infection & non-infected population এ আলাদা করে যথাযথ ব্যবস্থা নিতে হবে।
৪। মনে রাখতে হবে আমাদের দেশে death rate কিন্তু hospital release rate এর চেয়ে বেশি

বিষয়: ডঃ বিজন কুমার শীল ও তার কিট কাহন

Gongylonema neoplasticum নামের একটি গোলকৃমির সাথে cancer এর যোগসূত্র আবিষ্কার (১৯০৭-১৯১৩) করে Danish বিজ্ঞানী Johannes Fibiger ১৯২৬ সালে নোবেল প্রাইজ পান। পরবর্তীতে ১৯২৮-১৯৫২ পর্যন্ত গবেষণা করে তাঁর ফলাফল ভুল বলে প্রমাণিত হয়। এ তো গেল unintentional experimental ভুলের কথা।বিজ্ঞানে শ্রেফ চুরিও কিন্ত কম হয় না। ২০১৪ সালে একজন নবীন জাপানিজ বিজ্ঞানী দাবী করলেন যে তিনি pluripotent stem cell তৈরির একটি অতি সহজ পদ্ধতি আবিষ্কার করেছেন। তাঁর এ সাফল্য গাথা Nature জার্নালের একই সংখ্যায় দুটি পূর্ণাঙ্গ আর্টিকল হিসাবে প্রকাশিত হয়। কিন্ত অতি অল্প সময়ের মধ্যেই তাঁর সমস্ত ফলাফল ভুয়া বলে প্রমাণিত হয়। তাঁর PhD ডিগ্রি ও আর্টিকেল বাতিল হয়; চাকুরি চলে যায় এবং supervisor আত্মহত্যা করেন। এমন ঘটনা বহু আছে বিজ্ঞানে। কিন্ত সব ঘটনার জবাব বিজ্ঞানীগণই দিয়েছেন বৈজ্ঞানিক বিচার বিশ্লেষণের মাধ্যমে।

আচ্ছা, ডঃ শীল দাবী করেছেন যে তিনি COVID-19 detection এর একটি কার্যকরী কিট আবিষ্কার করেছেন। আমি তাঁর কিটের sensitivity, specificity, antigen না antibody ইত্যাদি কিছু নিয়েই কথা বলব না। যাঁরা সমালোচনা করছেন তাঁরা কি প্রমান করেছেন? আচ্ছা প্রমান বাদ থাক তাঁদের মধ্যে কে কে সর্বশেষ কবে পিপেট হাতে নিয়েছেন বা আদৌ ঐ বস্তু চিনেন কি না? না; এভাবে হয় না। বিজ্ঞানের জবাব বিজ্ঞান দিয়েই দিতে হয়। আর কাজটি কি খুবই কঠিন? টেস্ট করলেই তো হয়। ওষুধ প্রশাসন বিএসএমএমউ, আইসিডিডিআরবি, বিএলআরআই ইত্যাদি প্রতিষ্ঠান দিয়ে সহজেই করাতে পারেন এ কাজ।

কেউ কেউ আঁতকে উঠছেন এই ভেবে যদি false negative/false positive আসে? আমার প্রশ্ন হল সে বিপদ কি test না করার চেয়ে বেশি? এখন যে ঝালমুড়ির মত সব একাকার! আচ্ছা টাইফয়েড সন্দেহ হলেই যে Widal test করতে দেয়া হয় সেটাও তো sero-diagnosis । সে খানে কি false রেজাল্ট আসে না? Dengue, Viral hepatitis, Q-fever, Hormone Analysis ইত্যাদি কোন ধরনের টেস্ট? Ascariasis, Toxoplasmosis, Malaria, Avian Influenza, Streptococcosis, Hydatidosis ইত্যাদির জন্যও তো rapid kit ব্যাবহার হয়, যার কোনটিই শতভাগ সহিহ নয়। শুধু এসব কেন; highly sophisticated diagnostic tool ও কি বিতর্কের উর্ধ্বে ? শুধু অপারেটর বদল হলেই রেজাল্ট আকাশ-পাতাল ব্যবধান হতে পারে। আমার ছোট বোনকেই তো এক ক্লিনিকে USG করে বলল tumor ; আর এক ক্লিনিক বলল ‘বাচ্চা’; এখন বাচ্চাটির বয়স ৭ বছর।

এতএব, যাচাই বাচাইয়ের আগে আর নয়। যথেষ্ট হয়েছে! আশা করি সরকার জনগণের কথা ভেবে সদয় হবেন এবং এ কিটের উপযোগিতা যাচাই করবেন; ফলপ্রসু হলে অবশ্যই দেশের কল্যাণে ব্যবহার করবেন।

পুণশ্চঃ
১। সব কিছুতে জাতপাত বিচার করতে নেই।
২। critical সময়ে protocol এর সব ধাপ মানা যায় না। COVID-vaccine development ও কিন্ত সব step মানতে হবে এমন বলা হচ্ছে না! আর এটাতো in vitro kit?
৩। কোন কৃষিবিদ ভাল কিছু করতে চাইলে তাকে অপদস্থ করার জন্য আমরই যথেষ্ট; আর যদি তিনি হন ভেট তবে তো কথাই নেই!
৪। ভাল কিছু করা এত সোজা নয়। ডঃ শীল দের নামে মামলার কথাও বললেন একজন। দেশে বন্ধাত্ব কি এমনিতেই চলছে?
কেন জন্মাচ্ছেনা রবীন্দ্রনাথ, নজরুল, স্যার জগদীশ রা? কে নেবে রিস্ক?

ণস্বাস্থ্যের করোনা ভাইরাস সনাক্তকরণ কিট এবং ছোট্ট সামাজিক একটি রূপক গল্প”!!!

একটি সত্য ঘটনা অবলম্বনে আমার নিজের ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতার আলোকে একটি ছোট্ট গ্রাম্য চিত্র তুলে ধরছি…..। গল্পটা পড়লে বুঝতে সমস্যা হবেনা কেন জনাব ডাক্তার জাফরুল্লাহ চৌধুরীর প্রতিষ্ঠান কর্তৃক উদ্ভাবিত করোনা ভাইরাস সনাক্তকরণ এর কিট এর বিষয়ে এমন একটা অবস্থা তৈরি হলো!?

রম্য গল্প টি নিম্নরূপ:
আমার এক দূর সম্পর্কীয় মামা ছিল(তার নাম লালু-ওরফে লালচাঁদ)। ৬০ এবং ৭০ এর দশকের প্রথম দিকে বেচারার সংসারে ভীষণ টানাপোড়ন এবং অভাব ছিল। খুব গরিব মানুষ ছিলেন। পরের ক্ষেতে কাজ করে, অন্যের ক্ষেতে লাঙ্গল চাষ করে, কৃষি জমি বর্গা নিয়ে চাষ করে সংসার চালাতে হতো। উল্লেখ্য আমার ওই মামুর ছেলেরা এখন বেশ স্বাবলম্বী এবং তাদের ঘরে উচ্চশিক্ষিত ছেলেমেয়ে গড়ে উঠেছে। যেমন একজন হাফেজ হয়েছে একজন ইতিহাসে অনার্সসহ মাস্টার্স পাস করেছে আর একজন গোপালগঞ্জের প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশুনা করছে।) ওদের এই অবস্থা দেখে আমার খুব গর্ব হয়, ভালো লাগে, প্রাণটা জুড়িয়ে যায়। মামুর সংসারে অভাব ছিল বটে কিন্তু আমার বাবার নিকট ছিল ভীষণ অনুগত। আর এ কারণেই মামু তার নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসের জন্য মোটামুটি আমার বাবার অনেক কিছুর উপরে তার নির্ভরশীলতা ছিল (এবং ব্যাপারটা সর্বজনবিদিত ছিল)। আমি ব্যক্তিগতভাবে মামুর প্রতি কখনোই রূড় আচরণ করতে দেখি নাই আমার বাবাকে বা আমার কোন ভাইকে। আমার ওই মামু মাঝেমাঝে আমাদের বাঁশ ঝাড় থেকে থেকে বাঁশ কেটে নিয়ে আসতো নিজের পারিবারিক প্রয়োজনে। কিন্তু আমাদের কারোর কাছে বাবার কাছে জিজ্ঞাসা করার তেমন একটা প্রয়োজন বোধ করত না। কারণ সম্পর্কটা ছিল আমাদের সাথে তেমনই। আমার বড় ভাই একটু খুঁতখুঁতে স্বভাবের এবং একটু বেশি হিসেবী। কোন এক সন্ধ্যায় মামুর কাঁধে একটা বাঁশ দেখে মামু কে জিজ্ঞেস করল, “মামু তুমি প্রায় প্রায় বাঁশ কেটে আনো, এই বাঁশ তুমি কোথায় পাও?” মামুর উত্তর, “বাঁশ ঝাড় কি শুধু তোমাদের একার আছে? আর কারো নেই!?” আমার ভাই এর উত্তর,”দেখা যাক কার ঝাড়ের বাঁশ তুমি কাটো, দেখবো!”
কয়েকদিন পর কিছুটা ঘোর সন্ধ্যাবেলা(একটু হালকা অন্ধকার), মামুর কাঁধে মাঝারি সাইজের একটা বাঁশ! পাড়ার মাঝখানের প্রান্তে তিনমাথার কোনায় “তে মাথায়” আমার বড় ভাই দাঁড়ানো। কাঁধে বাঁশ সহ মামু পড়েছে তার সামনে। এবার মামু যাবে কোথায়?
বড় ভাইয়ের প্রশ্ন, “মামু বাঁশ কোথায় পেলে?” মামু তো জানে,সে ধরা খেয়ে গেছে! অতএব, ঝটপট উত্তর, “মুতে চিড়ে ভিজাবো, কিন্তু বিশ্বাসের পানিতে হাত দেবনা।”খুবই অহংকারী কথা! উত্তর দিয়েই মামু বাড়ীর পথে পা বাড়ালো!
পরের দিন সকালে আমার বড় ভাই বাঁশের ঝাড়ের গোড়ায় যেয়ে দেখে ‘নগদ বাঁশ কাটার চিহ্ন রয়ে গেছে (দু’একজন তা দেখেছে!) অত‌এব, ভাই আবার মামুকে ধরেছে, “মামু অমুক যে আমাকে বলল, কাল সন্ধ্যেবেলা তুমি বাঁশ কেটে এনোছো! ” কিন্তু কাল তুমি খুব বড় গলায় বললে, ” মুতে চিড়ে ভিজাবা, তাও বিশ্বাসের পানিতে হাত দিবানা! বাঁশ কি তোমার বাবার ঝাড়ের থেকে কেটে এনেছো?” আমার ভায়ের প্রশ্ন শুনে আরো অগ্নি শর্মা। কিন্তু মুখে একটা মুচকি হাসি দিয়ে বলল, বাঁশ তোর তা কাটিনি, আমি কাটিছি আমার বোনাই- বিশ্বাসের ঝাড়ের থেকে। বলেই হনহন করে চলে গেল। আমার লালু মামু এই ধরনের কাজ নিয়মিতই করতো আমাদের সঙ্গে একান্ত সম্পর্কের সূত্রে। কিন্তু বদনাম করার মত জীবনে কখনো অন্যের কোন জিনিস ধরে নাই। আমাদের মাঠে ঘাটে যেগুলো জিনিস কুড়িয়ে নেওয়ার মত পাওয়া যেত, অধিকাংশ সময় মামু আমাদের ক্ষেত-খামার থেকে তা কুড়িয়ে করত। আমার বাবা এ নিয়ে বেশি একটা মাথা ঘামাতেন না। কারণ ‘এছাড়া মামুর অন্য কোন উপায়‌ও ছিল না।’গরিব মানুষ পয়সা দিয়ে কিনতে পারবে না। চুরি করা তার পক্ষে সম্ভব ছিল না। তাই সময়ে সময়ে অসময়ে না বলেই আমাদের জিনিসগুলোই বেশিরভাগ সময় নিত। তারপরও মামু আমাদের খুব প্রিয় ছিল। মামু ইহলোক ত্যাগ করেছেন ২০-২৫ বছর আগে। মহান আল্লাহ পাক রাব্বুল আলামিন তাকে মাফ করুন এবং তাঁকে জান্নাত বাসী করুন। বাবাও ইহলোক ত্যাগ করেছেন, ১৯৯৪ সালের ৮ জুন তারিখে। মহান আল্লাহপাক আমার ওই লালু মামু সহ সকল মুসলমান মরহুমগণের বিদেহী আত্মাকে বেহেস্ত নসিব করুন। তাঁদের সবার সকল গুনাহ মাফ করুন।আমিন।

গল্পের সারাংশ: আমার ঐ মামুর বড় গলায় বলা”মুতে চিড়ে ভিজাবো, কিন্তু বিশ্বাসের পানিতে হাত দেবনা।” কিন্তু তার প্রয়োজনীয় শতকরা 90 ভাগ গীতা কি জিনিস প্রায় সবই বিশ্বাসের কোনো না কোনো স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তি থেকে সংগ্রহ করা!
@ (উল্লেখ্য,আমাদের পারিবারিক পদবী হচ্ছে বিশ্বাস)

গল্পটা কেন লিখলাম!?!
আমার মামু কে ছোট করার জন্য? আল্লাহপাক মাফ করুন কোনক্রমেই তা নয় (ইহা একটি উপমা মাত্র সমাজ চিত্রের) মামু ছিলেন সৎ মানুষ কিন্তু অহংবোধ ছিল মারাত্মক। শত অভাব থাকলেও কখনো অন্যের জিনিসে হাত হয়নি একথা আমিও এখনো দিল চিত্তে বলতে থাকবো।

“আমার ঐ মামুর মত মানুষের আমাদের এই সমাজে অভাব নেই!(। (.ম…..তে চিড়া ভিজাবে কিন্তু ডাক্তার জাফরুল্লাহ চৌধুরীর কিট সহজে ব্যবহার করতে ….দিবে…ন আ!?!)! ডক্টর জাফরুল্লাহ চৌধুরী নিশ্চয়ই জানেন তার কিছু শক্ত প্রতিপক্ষ আছে! ডক্টর জাফরুল্লাহ চৌধুরী স্পষ্টবাদী, নির্ভীক, দেশ প্রেমিক এবং দৃঢ় প্রত্যয়ী একজন ব্যক্তি (যতটুকু আমি বুঝি)।
ডক্টর জাফরুল্লাহ চৌধুরী দমে যাওয়ার মানুষ নন। তিনিও জানেন তার সামনে কে বা কারা আর হয়ে দাঁড়াতে পারেন। ভিন্নমতাবলম্বীর মানুষ হওয়া সত্ত্বেও দেশ ও জাতির স্বার্থে চরম মুহূর্তে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জনাব জাফরুল্লাহ চৌধুরীকে করোনা সনাক্তকরণ কিট তৈরীর অনুমতি দিয়েছেন। আমার গভীর বিশ্বাস ডক্টর জাফরুল্লাহ চৌধুরী চৌধুরী যে মতাবলম্বীরা মানুষই হোক না কেন? মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর অন্তরের মধ্যে জনাব জাফরুল্লাহ চৌধুরীর জন্য এক টুকরো সম্মান অবশিষ্ট আছে এবং প্রচ্ছন্ন ভালোবাসাও আছে। তা না হলে তিনি কখনোই তার প্রস্তাবে সাড়া দিতেন না।
যে কোন ভাল কাজের সমালোচনা থাকে, থাকে চরম বাধা এবং এই বাধার প্রাচীর কিভাবে ডিঙ্গাতে হয় একজন মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে ডক্টর জাফরুল্লাহ চৌধুরী নিশ্চয় জানেন, বিজয়ের নিশান কিভাবে উড়াতে হবে। বাধা এসেছে, বাধা আসবে এটা তিনিও ভালোভাবেই জানেন এবং বুঝেন। কিন্তু দেশ ও জাতির কল্যাণে তিনি যে কিছু একটা করার চিন্তা করেছেন এইটা অন্ততঃ এদেশের মানুষ সম্মানের সাথে তা দেখা উচিত এবং গ্রহণ করা উচিত। বিজ্ঞান যদি সংঘাতময় হয় নিশ্চয়ই জনাব জাফরুল্লাহ চৌধুরী সে বিষয়টা গভীরভাবে চিন্তা করে উনাদের উদ্ভাবিত কিট জাতির সামনে সব বাধা অতিক্রম করে সময়মতো পুনরায় প্রমান সহ উপস্থাপন করবেন। আমরা প্রত্যাশায় বুক বাঁধলাম। আমরা দেখতে চাই সকল সমালোচকের মুখে ছাই দিয়ে তিনি প্রমাণ করবেন তাদের উদ্ভাবিত সনাক্তকরণ কিটি টি অবশ্যই জাতির গুরুত্বপূর্ণ প্রয়োজন মেটাবে। সু ফলাফল দেখার জন্য অপেক্ষায় রইলাম। জাতির মেধাবী সন্তান জনাব ডাঃ জাফরুল্লাহ চৌধুরীর প্রতিষ্ঠান কর্তৃক উদ্ভাবিত কিট’র জয় হোক। ডাঃ জাফরুল্লাহ চৌধুরীর মাধ্যমে জাতি হিসেবে আমরা আরো একবার মাথা উঁচু করে বিশ্বকে দেখিয়ে দেয়ার চেষ্টা করব আমরা পারি। জনাব জাফরুল্লাহ চৌধুরী আপনাকে স্যালুট। আপনার বিজ্ঞানীদেরকে স্যালুট।আল্লাহ আপনাকে দীর্ঘজীবী করুন‌। আমিন।

ডাঃ মোঃ নূরুল আমীন

নোট>

RT PCR টেস্টে

আক্রান্ত হবার

১-৭দিনের মধ্যে ৬৭ -৭০% (একোরেসি)

৮-১৪দিনে ৫০%

১৫-৪৫দিনে ৪৫%

দিন যত যেতে থাকে আর টি পি সি আর এর সেনসেটিভিটি তত কমতে থাকে  আবার এন্টিবডির সেন্সেটিভিটি তত বাড়তে থাকে।

 

Please follow and like us:

About admin

Check Also

খামারীদের কেমন পরামর্শ দেয়া উচিত,কোনটা উচিত না এবং কিছু আলোচনা।

খামারীদের কেমন পরামর্শ দেয়া উচিত,কোনটা উচিত নাএবং কিছু আলোচনা। খামারীদের পরামর্শ দিতে গিয়ে যাতে সেটা …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Translate »