পোল্ট্র্যি পাওলনে ৭০% খরচ হয় খাবারে তাই কোন খাবার কেমন তা জানা উচিত।
নিজের সুবিধা অনুযায়ী খাবার পছন্দ করা উচিত।সব খাবারেরই সুবিধা অসুবিধা আছে।
পোল্ট্রির খাদ্য ব্যবস্থাপনায় খামারীগণ প্রয়োজন অনুযায়ী বিভিন্ন রকমের খাদ্য মোরগ মুরগিকে প্রদান করে থাকেন।
খাদ্য ব্যবস্থাপনায় ত্রূটি থাকলে তা উৎপাদন ব্যহত করে।খাদ্য ব্যবস্থাপনায় বিভিন্ন রকমের খাদ্যের মধ্যে ম্যাশ ,পিলেট এবং ক্রাম্বল উল্লেখযোগ্য।
ম্যাশ খাদ্যঃ
প্রধানত লেয়ারে ম্যাস খাবার ব্যবহার হয় যদিও অল্প কিছু কোম্পানী লেয়ারর জন্য পিলেট বানিয়ে থাকে যেমন আফতাব,প্যারাগন।
খাদ্যের সমস্ত উপাদান সমূহ এর মিশ্রণকে ম্যাশ খাদ্য বলে।আমাদের দেশে সাধারণত বাণিজ্যিক লেয়ার এবং ব্রিডারে ম্যাশ খাদ্য খাওয়ানো হয়।
ম্যাশ খাদ্য হাতের সাহায্যে এবং যন্ত্রের সাহায্যে তৈরি করা হয়।
হাতে প্রস্তুত ম্যাশ খাদ্য সুষম ভাবে মিশ্রিত হয় না ,কিন্তু যন্তের সাহায্যে প্রতি দানা সুষম ভাবে মিশ্রিত হয়।
যন্ত্রের সাহায্যে প্রস্তুতকৃত খাদ্যের আরো অনেক সুবিধা আছে যেমন
# মুরগির শারীরিক বৃদ্ধি ও উৎপাদন সুষম হয়
# সময় বাচে এবং খামারে ঐ সময় অন্যান্য কাজে ব্যবহার করা যায়।
# অনেক ঝামেলা এড়ানো যায়
যেমন পুস্টিমান বা সঠিক কার্যকারিতা পরিক্ষা করে নির্বাচন করা,উপকরণ সংরক্ষণ,প্রস্তুতকরণ,সুষমীকরণ ইত্যাদি।
ম্যাশ খাদ্যে ব্যবহারে সুবিধা সমূহঃ
ম্যাশ খাদ্যে সহজে প্রয়োজন অনুযায়ী খাদ্য উপাদন যোগ করা যায়।
ম্যাশ খাদ্যের স্বাদ অন্যান্য খাদ্যের তুলনায় বেশি।
খাদ্যের পুস্টি নস্ট হয় না
প্রস্তুতকারী যন্ত্রপাতি কম খরচে ক্রয় করা যায়।
প্রস্তুতকৃত খাদ্যের দাম তুলনামূলকভাবে কম
ম্যাশ খাদ্যের অসুবিধাঃ
খাদ্যের অপচয় বেশি হয়
সব ধরণের পুস্টি সমান ভাবে মুরগি পায় না।
খাদ্যে পাত্রে জমা পড়ে থাকে যা পরে বিষক্রিয়া সৃস্টি করে
খাদ্য সংরক্ষণ সময় তুলনামূলক কম
ম্যাশ খাদ্যের মধ্যে খাদ্যের পুস্টি বিরোধী কারণ সমূহ থেকে যায়।(এন্টিনিউট্রিশনাল ফ্যাক্টর)
পিলেট খাদ্যঃ
ম্যাশ খাদ্যকে যন্ত্রের ভিতর অত্যাধুনিক চাপ প্রয়োগ করে ছাচের ভিতর ঢুকিয়ে পিলেট তৈরি করা হয়।
মুরগির বয়স অনুযায়ী পিলেটের আকার ভিন্নতর হয়
খাবার নির্বাচনের ক্ষেত্রে খামারীরা উন্নত খাদ্য রুপান্তর হার মমৃদ্ধ খাদ্যেকে প্রাধান্য দিচ্ছে। পূর্বে বেশিভাগ ব্র্য়লার খামারী ম্যাশ খাদ্য ব্যবহার করতেন।
কিন্তু হাতে মিশিয়ে ম্যাশ খাদ্য তৈরি করা অনেক ঝামেলার কাজ বিধায় বর্তামনে পিলেট খাদ্য ব্যবহার বৃদ্ধি পাচ্ছে।
এছাড়া আধুনিক প্রযুক্তির যুগে সব কিছু ই এখন সয়ংক্রিয় এবং কম্পিউটারাইজ পদ্ধিতে নিয়ন্ত্রিত হচ্ছে।পোল্ট্রি শিল্পে অনেক আগে থেকেই খাদ্য প্রক্রিয়াজাত করে ব্যবহার করা হচ্ছে।
প্রক্তিয়াজাত খাদ্য হিসেবে পিলেট এখন খুবই পছন্দনীয়।বিশেষত পিলেট খাদ্য নাড়াচাড়া ,পরিবন খুবই সহজ।এছাড়া মুরগির উৎপাদন বা কার্যাকারিতা বাড়াতে পিলেট খাবার ম্যাশ খাবার অপেক্ষা উপযোগী।
পিলেট খাদ্যের খাদ্যের মধ্যে মুরগির দক্ষতা বৃদ্ধি পায় প্রধানত ৩ভাবে
১।জীবাণুমুক্তকরণ ব্যবহার দ্বারা খাদ্যের মান বৃদ্ধি হয়
২।খাদ্যেকে রুচিকর করে
৩।পুস্টির জৈব সরবরাহতা বৃদ্ধি করে।
পিলেট খাদ্য তৈরি করা এবং মান নিয়ন্রণের পদক্ষপ সমূহ
১।খাদ্য উপাদান গ্রহণ
পরীক্ষা সমূহঃ
খালি চোখে পরীক্ষা
আর্দ্রতা নির্ণয়
কেমিকেল টেস্ট
২।গুদামজাত করণ
আর্দ্রতা পর্যবেক্ষণ
গুদাম ব্যব স্থাপনা
পচন পর্যবেক্ষণ
৩।ব্লেন্ডিং
ব্লেন্ডিং পদ্ধতি
মাপার যন্ত্রপাতি
৪,ভাংগানো
ছাকনী(Screen)
চালুনী(sieve),বিশ্লেষ্ণণ
5.মেশানো(মিক্সিং)
মেশানোর সময়
মেশানোর পদ্ধতি
সংক্রমণ
পিলেটিং ঃপিলেটিং স্থায়িত্ব
সরবরাহঃআর্দ্রতার পরিমাণ,রাসায়নিক বিশ্লেষণ,বায়ো এসে
পিলেট খাদ্য তৈরি এবং গুণ গত মান পরীক্ষা
কন্ডিশনিংঃ
খাদ্যের উপাদান সমূহ মিশ্রিত করার পর পিলেট খাদ্য তৈরির জন্য কন্ডিশনিং চেম্বারে পাঠানো হয়।
এখানে উচ্চ তাপ,চাপ ও আর্দ্রাতায় খাবারের কাই তৈরি হয়।পরে এই কাই থেকে বিভিন্ন আকারের পিলেট তৈরি হয়।কন্ডিশনিং চেম্বারে যে উচ্চ তাপ প্রয়োগ করা হয় তাতে মোল্ডের বংশ বৃদ্ধি বাধা প্রাপ্ত হয় এবং বিভিন প্রকারের ব্যাক্টেরিয়া বিশেষ করে সালমোনেলা ধবংস প্রাপ্ত হয়।কন্ডিশনিং তাপমাত্রা ১৮০ ডিগ্রি ফারেনহাইট এর উপরে রাখা হয়।
কুলিং পিলেটঃ
এর পর পিলেট খাবারকে দ্রুত ১০ ডিগ্রি ফারেনহাইট তাপমাত্রায় ঠান্ড করা হয়।কুলিং যদি যথার্থ না হয় তাহলে আর্দ্রতা স্থানান্তর ,ফাংগাস জন্মানো এবং বিনের ক্ষতি সাধণ হতে পারে,
পিলেটের স্থায়িত্ব পরীক্ষাঃ
যদি ৮০% এর উপরে পিলেটের খাবার ভাল থাকে অর্থাৎ না ভেংগে যায় তাহলে এটাকে ভাল মানের ধরে নিতে হবে।
৭৫% এর নিচে হলে তা স্থানান্তর,নাড়াচাড়া অসুবিধা হয়।এতে খাদ্যের অপচয় হয়।
পিলেট খাদ্যের সুবিধাঃ
পিলেট খাদ্য হতে উদ্ধায়ী বস্তু বাতাসে উড়ে যায় না ফলে পুস্টিমান ভাল থাকে।
খাদ্যের ধূলিকণা পৃথক করা যায় ফলে খাদ্যের মান ভাল হয়
খাদ্যের অপচয় রোধ করা যায়।
ম্যাশ খদ্যের কিছু খাদ্য উপাদান মুরগি পছন্দ হতে পারে।ফলে ইহা পছনের উপাদান গুলো যেমন ভুট্রার দানা বেশি করে খাবে,এতে খাদ্যের অপচয় বেশি হয়।
পিলেটের দানা আকষণীয় হওয়ায় মুরগি তা সহজে গ্রহণ করতে পারে।
খাদ্যের অপচয় কম হলে খামারীর খরচ কম আসে ফলে খামারীর লাভবান হয়।
পিলেট তৈরির সময় অনেক ক্ষতিকর জীবাণূ ও উপাদান ধবংস প্রাপ্ত হয়
পিলেট খাদ্য প্রদানে লেবার খরচ তুলনামূলক ভাবে কম হয়
পিলেট খাদ্যের ঘনত্ব বৃদ্ধি পায় এবং অনেক কম ক্যালরী ব্যবহার করেও ভাল ফল পাওয়া যায়
খাদ্য পিলেটিং করার জন্য যে তাপ ,চাপ ও জলীয় বাষ্প প্রয়োগ করা হয় তা দ্বারা খাদ্যের গুণগত মান উন্নত হয়।
খাদ্য পিলেটিং করার সময় যে তাপ প্রয়োগ করা হয় তা দ্বারা কিছু পুস্টি বিরোধী কারণ trypsin inhibitor,thiaminase,amilase inhibitor,kimotrypsin দুরীভূত হয় এতে খাদ্য দক্ষতা বৃদ্ধি পায়।
পিলেট খাদ্য তৈরি করার পর বেশিদিন সংরক্ষণ করা যায় ।
পিলেট খাদ্যের প্রতিটি দানার মধ্যে সব ধরণের পুস্টি সমান ভাবে থাকে এতে মুরগির দৈহিক গড়ন সমান ভাবে হয়।
পিলেট খাদ্য গ্রহণে মুরগিকে তুলনামূলক ভাবে কম শক্তি ব্যয় করতে হয়
পিলেট খাদ্যের অসুবিধা
পিলেট খাদ্যের দাম ম্যাশ খাদ্যের তুলনায় বেশি
পিলেট খাদ্য খেলে পানি খাওয়ার পরিমাণ বেড়ে যায় এতে পাতলা পায়খানা হয়ে লিটার নস্ট হয়।
পিলেট খাদ্য খাওয়ানোতে মুরগি ঠোকরা ঠুকরি করার প্রবণতা বেড়ে যায়
পিলেট খাদ্য তৈরির জন্য প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি ক্রয়ে এবং কারীগরি সহায়তা প্রদানে খরচ বেড়ে যায়
পিলেট দানা তৈরির জন্য যে পিলেট বাইন্ডার ব্যবহার করা হয় তার জন্য অতিরিক্ত খরচ করতে হয়।
তবে ব্রয়লারের জন্য পিলেট খাদ্য ভাল।