স্নোড (Snood) হলো টার্কি মুরগীর একটি অঙ্গ বিশেষ যা ঠোঁটের উপরের অংশ থেকে উৎপন্ন হয়। স্ত্রী টার্কির ক্ষেত্রে স্নোড ২-৩ সেমি লম্বা হয় কিন্তু পুরুষ টার্কির ক্ষেত্রে এটি ৫-৬ সেমি পর্যন্ত লম্বা হতে পারে।
যা হোক এই স্নোডের কিছু উপকারিতা ও কিছু অপকারিতা বিদ্যমান। তবে সবকিছু মিলিয়ে কমার্সিয়াল টার্কি উৎপাদনকারীদের কাছে এই স্নোডের অপকারিতা বেশি প্রতীয়মান হওয়ায় বিশ্বের বিভিন্ন দেশে এমনকি পার্শ্ববর্তী দেশ ইন্ডিয়াতে কমার্সিয়াল টার্কিতে এই স্নোড কেটে ফেলার নিয়ম চালু আছে।
স্নোড কেটে ফেলার ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য কারনগুলো নিম্নরূপঃ
১. এটি সাধারন অবস্থায় টার্কির ঠোঁটের উপর ঝুলে থাকে বিধায় স্বাভাবিক খাদ্য গ্রহনে সমস্যা হয়।
২. খাদ্য গ্রহনের সময় নিজের ঠোঁট দিয়ে আঘাত লেগে স্নোড ক্ষতিগ্রস্থ হয়ে যায়।
৩. টার্কি পুরুষেরা নিজেদের মাঝে মারামারি করার সময় সহজেই স্নোডে আঘাতপ্রাপ্ত হয়ে রক্তক্ষরন ঘটে।
৪. ক্ষতিগ্রস্থ বা আঘাতপ্রাপ্ত স্নোডে সহজেই ব্যাকটেরিয়াল ইনফেকশন ঘটে থাকে।
৫. স্নোডে রক্তপ্রবাহের মাত্রা খুব বেশি হওয়াতে এটি ক্ষতিগ্রস্থ হলে প্রচুর রক্তপাত হবার সম্ভবনা থাকে।
৬. ঠোঁটের উপর স্নোডের ঝুলে পরা অবস্থা দেখে অনেক ভোক্তা টার্কি সম্পর্কে নেতিবাচক ধারনা করে। তাদের মতে এটা টার্কির সৌন্দর্য্য কমিয়ে দেয় এবং এটি থাকার কারনে টার্কির চেহারা কুৎসিত লাগে।
এইসকল কারনে কমার্সিয়াল টার্কি উৎপাদনকারীরা টার্কির স্নোড কেটে ফেলেন যাতে পরবর্তিতে এটি দ্বারা কোন সমস্যা সৃষ্টি না হয়। সাধারনত পুরুষ টার্কির স্নোড লম্বা হয় এবং সমস্যা সৃষ্টি করে বলে পুরুষ টার্কিতে বেশি ডিস্নোডিং করা হয়। স্ত্রী টার্কিতে তেমন একটা প্রয়োজন পরে না। বাংলাদেশে অনেকেই কমার্সিয়ালভাবে টার্কি উৎপাদন করছেন। তারা হয়তো অনেকেই স্নোড নিয়ে এইসব সমস্যার সম্মুখীন হয়েছেন। তারা চাইলে টার্কিতে ডিস্নোডিং বা স্নোড কেটে ফেলতে পারেন।
#কখন_ডিস্নোডিং_করবেন
ডিস্নোডিং করার জন্য সবচেয়ে ভাল সময় হ্যাচিং এর প্রথম ৩ দিন। এছাড়া ঐ সময় ডিস্নোডিং করতে না পারলে পরবর্তি ৩ সপ্তাহের মধ্যে ডিস্নোডিং করতে হবে। এই সময় ডিস্নোডিং করা নিরাপদ। রক্তক্ষরন হয় না বললেই চলে। কিন্তু ৩ সপ্তাহের পর ডিস্নোডিং এ রক্তক্ষরন বেশি হবার সম্ভাবনা থাকে।
#কিভাবে_ডিস্নোডিং_করবেন
প্রথম তিন দিনের মাঝে ডিস্নোডিং করতে চাইলে স্নোডের কুঁড়িটাকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দিয়ে চাপ দিয়ে খুঁটিয়ে তুলে ফেলতে হবে।
পরবর্তিতে ৩ সপ্তাহের মাঝে ডিস্নোডিং করতে হলে অস্ত্রপাচার করতে হবে। এক্ষেত্রে একজন ভেটেরিনারিয়ান বা দক্ষ ডিস্নোডার দ্বারা সুক্ষভাবে স্নোডটি সার্জিক্যাল ব্লেড দিয়ে কেটে ফেলতে হবে।
ডা শুভ দত্ত