চিকিৎসা দেয়ার জন্য আমি কি নিজের ইচ্ছায় যাচ্ছি নাকি খামারি আমাকে নিয়ে যাচ্ছে,নাকি আমার কাছে খামারি আসছে।আমি কি ফ্রি চিকিৎসা দিচ্ছি নাকি ফি এর বিনিময়ে দিচ্ছি।
চিকিৎসা করার আগে জানতে হবে ফিল্ডে কাদের সাথে কাজ করতে হবে,তারা কেমন এটার উপর আমার একটা লেখা আছে সেটা পড়লে জানা যাবে।
খামারী,ডিলার,বিভিন্ন ফিড,ভ্যাক্সিন,মেডিসিন,সাপ্লাইয়ার কোম্পানির সাথে কাজ করতে হবে।তাছাড়া ফিল্ডে সরকারি,বেসরকারী,প্রাইভেট,সিনিয়র,জুনিয়রদের নিয়ে কাজ করতে হয়,একেক জন একেক রকম ।সবার সাথে মিলেমিশে কাজ করতে হয়।কিন্তু সব কিছু সব সময় সহজ মা।বাধা বিপত্তি আছে।
তাছাড়া কাজের সেক্টর একেক জনের একেক রকম যেমন কেউ সরকারী জব,কেউ প্রাইভেট প্যাক্টিস,কেউ নিজ এলাকায়,কেউ অন্য জেলায়,কেউ ফিড মিল,হ্যাচারী,ব্রিডার ফার্ম,ল্যাব।একেক জায়গায় কাজের পরিবেশ একেক রকম।
ফিল্ডের খমারী ও ডিলারদের নিয়ে লেখা আছে সেটা পড়লে অনেক ধারণা হবে।
১।খামারি ও ডিলারদের ধরণ ও প্রকারভেদ জানতে হবে
২।ফার্মে যাবার আগেই হিস্ট্রি নিয়ে ডিজিজ ডায়াগ্নসিসের ৯০-৯০% করে ফেলতে হবে।৩০-৪০% কেসের ক্ষেত্রে ১০০% ডায়াগ্নোসিস করা যায়।
৩।হিস্ট্রি নেয়া জানতে হবে,মিনিমাম ১০টা প্রশ্নের উত্তর জানতে হবে.৯০% ভেট ও খামারী হিস্ট্রি নিতে ও দিতে জানেনা বা নেয় না/দেয় না।
হিস্ট্রির উপর আমার একটা লেখা আছে যা অবশ্যই জানতে হবে।
৪।হিস্ট্রি নেয়ার পর ফার্মে গিয়ে লক্ষণ দেখে পি এম করতে হবে,কয়েক ঘন্টা আগে মারা গেছে বা এই মাত্র মারা গেছে বা অসুস্থ মুরগির পি মে করতে হবে,মুরগি বেশি মারা গেলে ৪-৫টা মুরগি কাটতে হবে।কম হলে যতটা মারা যায় সে গুলো কাটতে হবে।
৫।হিস্ট্রি নিয়ে দেখতে হবে এক্সিডেন্টাল ডেথ কিনা বা গলায় প্যাচ লেগে মারা যাচ্ছে কিনা,পচা,বাসি মুরগির পি এম না করাই ভাল
৬।হিস্ট্রি সাথে মিল অর্গান দেখতে হবে যদি ডায়াগ্নোসিস হয়ে যায় তাহলে ঠিক আছে যদি না হয় তাহলে সব গুলো অর্গান দেখতে হবে এবং ডায়াগ্নোসিস করতে হবে।
৭।খামারী সব প্রশ্নের উত্তর দিতে চাইবে না কিন্তু আদায় করে নিতে হবে তানাহলে খামারীকে বাদ দিতে হবে।যেসব খামারী কথা শুনবে না তাদের ফার্মে যাওয়া যাবে না,চিকিতসা দেয়া যাবে না।
যদি খামারী ফি দেয় কিন্তু প্রেস্ক্রিপশন নিজের মত চেঞ্জ করে সেসব ক্ষেত্রে চিকিৎসা করা যেতে পারে তবে সুস্থ না হলে খামারী কিছু বলতে পারবে না ,বলার সুযোগ দেয়া যাবেনা।
৮।খামারী যে কোন প্রশ্ন করলে উত্তর দিতে হবে মানে নিজের সব জানতে হবে।
মুরগির ভ্যাক্সিন সিডিউল,লেয়ার,ব্রয়লার,সোনালীর বয়স অনুযায়ী খাবার,পাত্র,জায়গা,ওজন,তাপমাতা,প্রডাকশন,মোল্টিং,ব্যবস্থাপনা সব জানা লাগবে।শট টেকিনিক জানা লাগবে যা গ্রুপে আলোচনা করেছি,পোস্ট দিয়েছি।এসব সূত্র আমার নিজের তৈরি অন্য কোথাও নাই।
৯।ভাল কোম্পানীর মেডিসিন ভ্যাক্সিন লিখতে হবে।এক্টা প্রেস্ক্রিপশনে কি কি আইটেম থাকে তা পয়েন্ট ফর প্রেস্ক্রিপশন নামে একটা লেখা আছে সেখানে বিস্তারিত আছে।এটা অবশ্যই জানা উচিত।
১০।ডোজ যাতে কম না হয় বা বেশি না হয়,আমি সহজ ভাবে ডোজ হিসাব করার টেকনিক দিয়েছি।মুরগি সুস্থ না হবার পিছনে ডোজ গুরুত্বপূর্ণ।
১১।সঠিকভাবে এন্টিবায়োটিক,মেডিসিন সিলেক্ট করতে হবে যা আলোচনা করেছি।সেটার উপর অনেক আলোচনা আছে যা জানা লাগবে।
১২।প্রোগ্নোসিস করতে হবে মানে পরে কি হবে তা আগেই বলে দিতে হবে এতে খামারীরা অবাক হবে এবং বিশ্বাস তৈরি হবে।তবে তা করতে দক্ষতা লাগবে,মুরগির ব্লাড সার্কোলেশনে চলে যেতে হবে।ক্যাপিলারির ভিতর ঢুকে সব খবর নিতে হবে।
১৩।মর্টালিটি,মর্বিডীটি,ভাল হতে কতদিন লাগবে বা ভাল হবে কিনা,কত টাকা খরচ হবে,ডিক কত কমনে,প্রডাকশন উঠতে কত দিন লাগবে,্ডিমের সাইজ কেওম হবে,কতদিন ডিম পাড়বে।লাভ জনক হবে কিনা।
১৪।খামারির প্রশ্নের উত্তর মাঝে মাঝে এমন ভাবে দিতে হবে যাতে সে বুঝে এতদিন ত এমন ভাবে কেউ বলে নাই।
১৫।আমার চিকিৎসা বা পরামর্শে খামারীর কি লাভ হল তা দেখাতে হবে,খরচ কত কমলো,প্রডাকশন কত বাড়ল।
১৬।আমাদের দেশে খামারীরা সঠিক ভাবে বললে তা সহজে মেনে নিবে না বরং তারা ভুল টাই করবে কিন্তু চেস্টা চালিয়ে যেতে হবে।
হাল ছাড়া যাবে না।
১৭।আমি যে চিকিৎসা দিবো তা চালাতে হবে,অন্য কোন চিকিৎসা করা যাবে না।
১৮।প্রেস্ক্রিপশনে কিছু আনকমন বিষয় আনতে হবে যা নরমালী কেউ লিখেনা ।
যেমন যেমন করাইজা ভাল হতে ১৫দিন লাগবে,এটা একটা পয়েন্ট।
যদি ১০০০ ডিম পাড়া মুরগি হয় তাহলে যদি এমাইনোভিট প্লাস দিলে দিবো ৫০০মিলি
দিনে ১০০ করে ৫দিন।
লেভোক্সিন দিলে দিনে ২০০মিলি করে ৫দিন(১০০+১০০) অথবা ১০০+১০০+৫০ করে ৪দিন।
বডি ওয়েট অনুযায়ী,টোটাল মেডিসিন কে ভাগ করে দিতে হবে।
ভগ্নাংশ রাখা যাবে না।
কোন বয়সে কত খাবার ও পানি খাবে সেই অনুযায়ী দিবো।শীতে যাতে কম নাহয় আবার গপ্রমে যাতে বেশিনা হয় স্ট্যান্ডার্ড ধরে দিতে হবে।
ভেলোজেনি এন ডি হইছে তাহলে শুধু আর ডি বি ভ্যাক্সিন দিলেই হবে।
ডিজিজের প্যাথোজেনেসিসি জেনে চিকিৎসা দিতে হবে।না জেনে মুখস্থ চিকিৎসা দেয়া থেকে বিরত থাকতে হবে।
১৯।প্রস্ক্রিপশন হবে সঠিক ডায়াগ্নোসিস,মেডিসিন,ডাক্তার ও খামারীর মেল বন্ধন।প্রেসক্রিপশনকে এভাবে বলা যায় যেমন মা তেমন বাচ্চা বা যেমন বীজ তেমন চারা।যেমন ডায়াগ্নোসিস হবে তেমনই প্রেস্ক্রিপশনই হবে যা মেডিসিন এবং ব্যবস্থাপনা দিয়ে সাজানো হয়।
২০।বুকে সাহস থাকতে হবে,সব জানতে হবে,মাথায় রাখতে হবে খামা্রী আমার থেকে বেশি বুঝে না।খামারী বেশি বুঝার চেস্টা করলে ভাইরাস/ব্যাক্টেরিয়ার স্টেইন,এন্টিবায়োটিকের মোড অফ একশন,পোল্ট্রির ফিকিওলজি,ভ্যাক্সিনেশিনের মেকানিজম,ব্যবস্থাপনার আসল কাহিনী ও ব্যাখা দিয়ে নাজেহাল করে দিতে হবে,মুরগির প্রোগ্নোসিস করে দিতে হবে।বলতে হবে আপনার মুরগি কালকে আর মারা যাবে না।বা আরো ৫০টা মারা যাব্র পর ভাল হয়ে যাবে বা আপনার মুরগি একটা ও মারা যাবেনা,বা বলতে হবে আপনার মুরগি ৫দিনে ভিতর সুস্থ হয়ে যাবে বা বলতে হবে ৫দিনের ভিতর সব মুরগি মারা যাবে,মাঝে মাঝে বলতে হবে আপনার নিয়ম অনুযায়ী মেডিসিন দিলে ২০হাজার টাকা খরচ হবে আমি দিলে ৫হাজার টাকা খরচ হবে।যখন এসব মিলে যাবে তখন ভক্ত হয়ে যাবে।এইভাবে কাজ করতে গেলে ভাল জানা লাগবে।আপ্নারা যদি জানেন ঠিক আছে কিন্তু যদি জানতে চান তাহলে আপনাদের জন্য আছে ভি টি এস যেখানে সব জানার ও শিখার সুযোগ আছে(ভেট ট্রেনিং স্কুল)