এন্টিবায়োটিক কিভাবে সিলেক্ট করবো
এক এন্টিবায়োটিকই অনেক অর্গানিজমের বিরুদ্ধেই কাজ করে কিন্তু আমাদের সেখান থেকে গুরুত্ব বিবেচনা করে বাচাই করতে হবে।
কিসের উপর ভিত্তি করে চয়েস করবঃ
১।সিঙ্গেল ডিজিজ নাকি মিক্স ইনফেকশন
মিক্স হলে২টি এন্টাইবায়োটিক দিতে হবে।তাছাড়া সিনারজেস্টিক বিবেচনা করে ২টি দেয়া যায়।
২।বয়স
বয়স কম হলে এনরো ও নিওমাইসিন দেয়া ঠিক না কারণ নিওমাইসিন ভিটামিন শোষণে বাধা দেয়।বাচ্চা মুরগি এমনিতেই ডেফিসিয়েন্সি থাকতে পারে সেখানে নিওমাইসিন দেয়া হয় তাহলে আরো সমস্যা বাড়বে।
এনরোমাইসিন বাচ্চাতে দিলে ওভার ডোজ বা লংটাইম দিলে বাচ্চা প্যারালাইসিস হয় এবং ডিজ ব্যাক্টেরিওসিস হয়।
তাই বাচ্চায় এসব না দিয়ে দরকার হলে এমোক্সিসিলিন বা কসুমিক্স বা কলিস্টিন দেয়া যায়।
তাছাড়া যদি লেয়ার হয় তাহলে কম দামী বা কম পাওয়ারের এন্টিবায়োটিক দিতে হবে কারণ লেয়ার ২ বছর থাকে বিধায় অনেক এন্টিবায়োটিক এর দরকার হতে পারে।যদি ১ম দিয়ে দেই আর রেজিস্ট্যান্ট হয়ে যায় তাহলে পরে এন্টিবায়োটিক এ কাজ হবে না।
৩।আগে কোন এন্টিবায়োটিক ব্যবহার করা হয়েছে।
হিস্ট্রি নিয়ে দেখতে হবে আগে কোন এন্টিবায়োটিক কতবার দিয়েছে।যেগুলো দিয়েছে বা রেজিস্ট্যান্ট হয়ে গেছে সেগুলো বাদ দিতে হবে।
৪।লাইফ টাইম কত সময়(ব্রয়লার হলে আপাতত রেজিস্ট্যান্ট হবার সুযোগ কম কারণ ১মাসের মধ্যে বিক্রি হয়ে যায়)
৫।খামারীর অর্থনৈতিক অবস্থা
কিছু খামারী আছে যারা বেশি দামের বা বেশি মেডিসিন চায় তাদের ক্ষেত্রে দামী এন্টিবায়োটিক দেয়া লাগতে পারে।
আবার কিছু খামারী আছে যারা কম দাম বা অল্প খরচে চিকিৎসা চায় তাদের কথা চিকিৎসা দিতে হবে।
৬।রোগ টি ভাল হতে কত সময় লাগবে সেটা বিবেচনা করতে হবে যেমন করাইাল/এইচ ৯ ভাল হতে প্রায় ১মাস লাগে তাই কম দামী এন্টিবায়োটিক দিতে হবে।লং এক্টিং এন্টিং এন্টিবায়টিক দেয়া ভাল ।
৭।রোগ টি সেলফ লিমিটিং কিনা যেমন কক্সি।
এইচ ৯,আই বি এসব ক্ষেত্রে এন্টিবায়োটিক তেমন ইফেক্টিভ না তাই কম দামি নরমাল এন্টিবায়োটিক দিলেই হয়।
আমাশয়ের ডোজ ৫-৭দিন দেয়ার পর যদি ভাল না হয় তাহলে আর না দেয়াই ভাল।এমনিতে ভাল হবে।
খামারী যদি সব দায়িত্ব ডাক্তারকে দেয় তাহলে যা দরকার তা দিলেই হবে।
অনেক খামারীই নিজের মত করে চিকিৎসা চায়।
৮।অর্গানিজম কি(ব্যাক্টেরিয়া,ভাইরাস,প্রোটোজোয়া,কৃমি,ফাংগাস,মেটাবলিক)
রোগের ধরণ বুঝে এন্টিবায়োটিক হবে।ফার্মে গেলেই এন্টিবায়োটিক দিতে হবে এমন অভ্যাস থেকে সরে আসতে হবে।
৯।চিকিৎসা খরচ মানে এন্টিবায়োটিকের দাম,তাছাড়া কস্ট ইফিক্টিভ কিনা তা দেখতে হবে।
পোল্ট্রি ফার্ম মানে ব্যবসা।এখানে লাভ খুজতে হবে।
১০হাজার টাকার মেডিসিন দিয়ে ১২হাজার টাকার লাভ না হয় তাহলে দিবো না।
আগে দেখতে হবে লাভ হবে কিনা।রোগ টি ভাল হবে কিনা।
১০।প্রচলিত এন্টিবায়োটিক গুলোর নাম এবং কোন গুলো রেজিস্ট্যান্ট হয়ে গেছে।
মার্কেটের এন্টিবায়োটিক গুলোর লিস্ট জানা লাগবে দাম সহ।রেজিস্ট্যান্ট এন্টিবায়োটিক গুলো কি কি আছে।
তবে ফিল্ডে রেজিস্ট্যান্ট হলেও নির্দিস্ট ফার্মে রেজিস্ট্যান্টা নাও হতে পারে।
লেভোফক্সাসিলিন,ফ্লোরফেনিকল ,টিল্ভালোসিন সব চেয়ে ভাল।ট্রাইসালফা ভাল।
১১।এন্টাগনিজম ও সিনারজেস্টিক কিনা দেখতে হবে
এটার উপর আর্টিকেল আছে সেটা পড়ে নিলেই হবে।।তবে সাথে সাথে মনে থাকতে হবে তা নয়। সময়ের সাথে সাথে এক সময় সব মনে থাকবে।
১২।রোগের তীব্রতা
১৩।প্রডাকশন / গ্রোয়িং
কিছু এন্টিবায়োটিক আছে যা দিলে প্রডাকশন কমে যেতে পারে যেমন সাল্ফার ড্রাগ,কোন কোন সময় জেন্টামাইসিনের জন্য ডিম কমে যেতে পারে।
এটা নির্ভর করে এন্টিবায়োটিকের ডোজ ও পিরিয়ডের উপর।এক নাগারে অনেক দিন ৭-১৪দিন দিলে লিভারের উপর প্রভাব পড়ে আবন ডিস ব্যাক্টেরিওসিস হয় এতে ভিটামিন মিনারলের ঘাটতি হয় ফলে ডিমকমে যায়।
তবে মেইন কারণ
অসুস্থ মুরগি খাবার ও পানি কম খাওয়া।তাছাড়া রিপ্রডাক্টিভ সিস্টেম ড্যামেজ হবার কারণে ডিম তৈরি হতে পারে না।
মেডিসিন গুলোও অনেক সময় তিতা হয় যার কারণে পানি কম খায় আর পানি কম খেলে ডিম কমে যাবে।
গ্রোয়িং এর সময় টিয়ামোলিন দেয়া যাবে না।
প্রডাকশন মুরগিতে এন্টিকক্সি দেয়ার দরকার নাই কারণ প্রডাকশন মুরগিতে অনেক স্পিসিস ই রেজিস্ট্যান্ট হয়ে যায় ,তাছাড়া লিটারে না থাকার কারণে কক্সির সম্বাবনাও কম থাকে,দিলেও এম্পোলিয়াম বা সালফাক্লোজিন দেয়া যাবে।অন্য গুলো দিলে ডিম কমে যায়,ডিমের কালার সাদা হয়,কুদুমের কালার ও স্বাদ পরিবর্তিত হয়ে যায়।
১৪।রুট(খাবারে,পানিতে বা ইঞ্জেকশন কিনা),ইঞ্জেকশন করার লোক আছে কিনা
১৫।এন্টিবায়োটিক ছাড়া ভাল হবে কিনা
করাইজাতে এন্টিবায়োটিক না দিয়ে সুস্থ করেছিলাম।তাছাড়া লেয়ারে ৬দিন কক্সির চিকিৎসা দেয়ার পর ও ভাল নি।পরে আরো অনেকদিন কক্সি ছিল কিন্তু আমি কক্সির চিকিৎসা আর করিনি।কিন্তু পরে ভাল হয়ে গিয়েছিল,সেলফ লিমিটিং এর নিয়ম অনুযায়ী।
১৬।খামারীর ইচ্ছা/চাহিদা।
খামারি যদি নিজের মত করে চালাতে চায় চালাক সমস্যা নাই কিন্তু ভিজিট টা দিতে হবে।নিজের মত চালালে সমস্যা হলে কথা বলার সুযোগ দেয়া যাবে না।
নোট ২।
পোল্ট্রিতে নরমালী ডাইজেস্টিভ সিস্টেমের উপর এন্টিবায়োটিক সবচেয়ে বেশি ব্যবহার হয়,তারপর রেস্পিরটরী সিস্টেম,৩য় ধাপে ইউরিনারী সিস্টেম।
যে অর্গানিজম যে সিস্টেমে থাকে এন্টিবায়োটিক সেই সিস্টেমেই কাজ করে।
পোল্ট্রিতে ডাইজেস্টিভ ও রেস্পিরেটরী সিস্টেমেই মেইনলি অর্গানিজম থাকে এবং রোগ তৈরি করে।
রিপ্রডাক্টিভ,নার্ভাস,ইমোন,কার্ডিওভাস্কোলার,স্কেলেটাল সিস্টেমের উপর ডিজিজ হয় কিন্তু সেখানে এন্টিবায়োটিক তেমন কাজ করে না।তাছারা এয়ারস্যাক ও ইয়ক স্যাকে ও এন্টিবায়োটিক আজ করে না।
কোন ডিজিজে কোন এন্টিবায়োটিক দেয়া যায়(সব কিছু অবস্থার উপর নির্ভর করে,অনেক সময় মিক্স ইনফেকশন থাকে,তীব্রতা কম বেশি হতে পারে)
Please follow and like us: