ইনকিউবেটরে ডিম দেবার পরে ডিমের যত্ন নেবার সময়কে সাধারনত দুইভাগে ভাগ করা হয়,
প্রথম ভাগ
ইনকিউবেটরে ডিম দেবার দিন থেকে ডিম ফুটার ৩/৪দিন আগে পর্যন্ত, এই সময়টাতে ডিম গুলোকে সেটার রাখতে হয়।
দ্বিতীয়ত ডিম ফুটার ৩/৪আগে থেকে ডিম ফুটে বাচ্চা বের হওয়া পর্যন্ত, এই সময় ডিমকে হেচার ট্রেতে শুয়ায়ে রাখতে হয়।
আজকে আমরা জানবো হেচারে ডিম রাখার পরে সেই ডিমের কিভাবে যত্ন নিতে হয়।
হেচিংএর জন্য ডিম রাখার পরে যে সকল যত্নের বিষয়ে পরিবর্তন আনতে হয়, তাহলোঃ
*ডিম ঘুরানো বন্ধ করা।
*তাপমাত্রা একটু কমিয়ে দেয়া,(কিছু ক্ষেত্রে ইনকিউবেটরে ডিম দেবার দুই সপ্তাহ পর থেকেই তাপমাত্রা একটু করে কমাতে হয়)।
* ইনকিউবেটরে আদ্রতা বাড়িয়ে দেয়া।
*ইনকিউবেটরের ভিতর পর্যাপ্ত পরিমান অক্সিজেনের ব্যবস্থা করা।
*এবং খুব প্রয়োজন ছাড়া ইনকিউবেটর না খোলা।
এখনে যে বিষয় গুলোর উপর লক্ষ রেখে হেচিংএর সময় বাচ্চার যত্ন নিতে হয়, তা হচ্ছেঃ
তাপমাত্রা কমানো।
আদ্রতা বাড়ানো।
এবং ইনকিউবেটরের ভিতর বাতাস চলাচল এবং পর্যাপ্ত অক্সিজেনের ব্যবস্থা করা।
এই কাজ গুলোর মাধ্যমে হেচিংএর সময় ডিমের যত্ন নিয়ে সঠিক ভাবে বাচ্চা ফুটে বের হবার ব্যবস্থা রাখা হয়।
এই কাজ গুলোর পিছনে বেশ কিছু কারন রয়েছে যেমনঃ
*এখনে তাপমাত্রা কমনোর উদ্দেশ্য হচ্ছে হেচিংএর সময় ডিমের ভিতরে বাচ্চা শরিরে একটা নিজেস্ব তাপ তৈরি হয়,
তাই সেই তাপমাত্রা সঠিক রাখতে ইনকিউবেটরের মূল কন্ট্রোলারের বা হিটারের তাপমাত্রা কমাতে হয়,
কারন ইনকিউবেটর তাপমাত্রা যদি বেশি হয় তাহলে সেই তাপ ডিমের ভিতরে বাচ্চা শরিরের স্বাভাবিক তাপমাত্রার উপর প্রভাব ফেলে যার ফলে হেচিংএর সময় ডিমের ভিতর বাচ্চা মৃত্যু হতে পারে।
*আদ্রতা বাড়ানোর মূল উদ্দেশ্য হচ্চে বাচ্চাকে খুব সহজে ডিমের ভিতর থেকে বের হবার ব্যবস্থা করে দেয়া।
আদ্রতা কম থাকলে ডিম শুকিয়ে যায়,যার ফলে ডিমের ভিতরে বাচ্চা বড় হয়েও বের হতে পারেনা,
এটা পরিলক্ষিত হয় যখন একটি বাচ্চা ডিম ফুটো করে ঠোট বের করে দেবার ৪৮ঘন্টা পরও বের হতে পারেনা, এমনটা ঘটলে বুঝতে হবে বাচ্চা ডিমের ভিতরে আটকে গেছে, তখন খুব সাবধানে ডিমের খোসা ফেটে দিয়ে বাচ্চাকে বের হবার ব্যবস্থা করে দিতে হবে,
প্রয়োজনে হাত দিয়ে ডিমের ভিতর থেকে বাচ্চা বের করে হেচিংট্রেতে রেখে দিততে হবে, এটা শুধুমাত্র জরুরী অবস্থায় করা যাবে অন্যথায় ডিম আগেই ভেঙ্গে বের করলে বাচ্চা মারা যাবে।
*বাতাস চলাচলের ব্যবস্থা করা এবং পর্যাপ্ত পরিমান অক্সিজেনের ব্যবস্থা রাখার বেশ কিছু কারন আছে,
তা হচ্ছেঃ হেচিং এর সময় ডিম স্থীর থাকে তাই ডিমের অন্য পাশে সঠিক আদ্রতা পৌছানো, সঠিক তাপমাত্রা পৌছানো, এবং অক্সিজেন পৌছানো,
এই তিনটা কাজ এক সাথে করা হয়, বাতাস প্রবাহের মাধ্যমে, যেমন বাতাসের মধ্য দিয়ে আদ্রতা ছড়িয়ে সব স্থানে সমান থাকে, বাতাসের মধ্য দিয়ে তাপমাত্রা ছড়িয়ে সব স্থানে সমান থাকে,
সেই কারনে হিচংএর সময় পর্যাপ্ত অক্সিজেন বজায় রাখার পাশাপাশি বাতাস চলাচলেরও ব্যবস্থা রাকতে হয়।
*হেচিংএর সময় সঠিক তাপমাত্রা, ৩৭.৫ এইতাপমাত্রা সব স্থানে সমান রাখতে কন্ট্রোলারে এই তাপমাত্রার চেয়ে কিছুটা কম বা বেশি তাপমাত্রা সেট করার প্রয়োজন হতে পারে,
সেটা মূলত ইনকিউবেটরের ভিতরে কন্ট্রোলারের সেন্সর কোথায় স্থাপন করা হয়েছে সেটার উপর নির্ভর করে।
হেচিএর সময় সঠিক আদ্রতা হচ্ছে ৬৫%থেকে ৭৫%পর্যন্ত, তবে ইনকিউবেটরের হিমিউডিটি সেন্সর স্থাপনের উপর নির্ভর করে সব স্থানে আদ্রতা সঠিক রাখতে প্রয়োজনবোধে আদ্রতা ৭৫%থেকে ৮৫%পর্যন্ত রাখা হয়।
সঠিক যত্ন নিলে সঠিক ফল পাওয়া যায় এটাই স্বাভাবিক।
যদি কখনো দেখেন ইনকিউবেটরে একটি ডিম নষ্ট হয়েছে তখন ভাববেন না ডিম টি অযথা নষ্ট হয়েছে, ঐ ডিম টি আসলে আপনাকে শিক্ষা দিতে নষ্ট হয়েছে,
তাই নষ্ট ডিম টি ফেলে দেবার আগে একবার ভাবুন কেনো ওটা নষ্ট হলো,এবং সেই ভুল সংশোধন করুন,তাহলে দেখবেন পরবর্তীতে আর ঐ সমস্যা হবেনা, তাই নিজের ভুলকে নিজের শিক্ষা হিসেবে গ্রহন করে পরবর্তীতে সতর্ক হয় চললে দেখবেন আর কোনো সমস্যাই আপনার কাছে টিকতে পারবেনা।