মশা সম্পর্কে কিছু তথ্য
লে: কর্নেল মোঃ তুহিন হাসান, পিএসসি
পরিচালক (ভেটেরিনারিয়ান)
বডার গার্ড বাংলাদেশ
১। পৃথিবীর সবচাইতে মারাত্মক প্রাণী মশা। প্রতিবছর মশার কারণে ম্যালেরিয়া, ডেঙ্গুসহ নানাবিধ রোগে আক্রান্ত হয়ে প্রায় দুই মিলিয়নেরও বেশি মানুষ মারা যায়।
২। মশার প্রায় ৩,৫০০ প্রজাতি আছে। কিছু প্রজাতিই কেবল মানুষসহ অন্যান্য স্তন্যপায়ী প্রাণীকে কামড়ায়। বাকিরা নির্ভর করে ফুলের মধুর উপর! মশাও ফুল থেকে মধু সংগ্রহ করে!
৩। মশা কানের কাছে আসলে আমরা যে শব্দ শুনি তা মূলত মশার ডানা ঝাপটানোর শব্দ। একটি মশা সেকেন্ডে প্রায় ৩০০-৬০০ বার ডানা ঝাপটাতে পারে।
৪। মশার প্রধান খাবার হলো গাছের রস। রক্তের প্রোটিন কাজে লাগায় ডিম পাড়ার জন্য । কেবলমাত্র স্ত্রী মশাই মানুষকে কামড়ায়। পুরুষ মশারা চারপাশে থেকে মানুষকে ব্যতিব্যস্ত রাখে যাতে স্ত্রী মশাটি নির্বিঘ্নে রক্ত শুষে নিতে পারে।
৫। একটি মশার ওজন হতে পারে ২.৫ মিলিগ্রাম অর্থাৎ ০.০০২৫ গ্রাম এবং মশার ৪৭ খানা দাঁত আছে! একটি মশা ঘণ্টায় প্রায় ১-১.৫ মাইল বেগে উড়ে যেতে সক্ষম।
৬। একটি মশা একসাথে ১০০ – ৩০০ ডিম পাড়ে । ডিম থেকে বের হওয়ার প্রায় এক সপ্তাহের মধ্যেই মশা পূর্ণবয়স্ক মশার মত আচরণ করতে শুরু করে। মশার আয়ুকাল প্রজাতি ভেদে ৫ – ৬ মাস পর্যন্ত হয়ে থাকে ।
৭। অনেকজনের মধ্যে কোন একজনকে মশা তুলনামূলক একটু বেশিই কামড়াচ্ছে। এর কারণ তার মধ্যে এমন কিছু আছে যা মশাদেরকে তাকে খুঁজে বের করতে সহায়তা করে। মশা গায়ের গন্ধ, নিঃশ্বাসের মাধ্যমে ত্যাগ করা কার্বন-ডাই অক্সাইড থেকে কামড়ানোর জন্যে উপযোগী মানুষ বা অন্যান্য প্রাণীকে শনাক্ত করে। অনেক সময় চেহারা দেখার মাধ্যমেও শনাক্ত করতে পারে। নিয়মিত গোসল না করলে, অতিরিক্ত ঘামলে, শরীরের উত্তাপ বেশি হলে মশা কাউকে সহজেই ভিক্টিম হিসেবে চিহ্নিত করে নিতে পারবে।
৮। মশারা মূলত বদ্ধ জলাশয়ে কিংবা স্যাঁতস্যাঁতে স্থানে ডিম পাড়ে। বাড়িতে কোন জায়গায় অল্প পরিমাণে পানি দীর্ঘদিন যাবত জমে থাকলে সেটা হয়ে উঠতে পারে মশার জন্যে ডিম পাড়ার উত্তম স্থান।
৯। মশা যে স্থানে কামড়ায় সেইস্থান ফুলে যায় এবং অপেক্ষাকৃত লাল হয়ে যায়। মশা স্যালাইভা নামে এক জাতীয় প্রোটিন প্রবেশ করিয়ে দেয় মানুষের শরীরে, যা কিনা রক্তের জমে যাওয়া প্রতিরোধ করে। আর এই স্যালাইভার জন্যেই আক্রান্ত স্থান ফুলে লাল হয়ে যায়