বাংলা টিকিপানচিল,
বিবিধ- বাংলা টিকিপানচিলের বৈজ্ঞানিক নামের অর্থ কমলা রঙের পানচিল ( পুরনো ইংরেজি starn= কমলা, bengalensis= বাংলার)
বর্ণনা- বাংলা টিকিপানচিল কালো ঝুটি ও ধূসর ডানার সামুদ্রিক পাখি ( দৈর্ঘ্য ৪৩ সেমি, ডানা ২৮.৫ সেমি, ঠোঁট ৫.৩ সেমি, পা ২.৮ সেমি, লেজ ১৩.৫ সেমি)। প্রজনন ঋতুতে প্রাপ্তবয়স্ক পাখির পিঠের দিক ফিকে ধূসর, দেহের নিচের দিক একদম সাদা, কপাল, মাথার চাঁদি ও ঝুটি কালো, কোমর ডানা উপরি-ঢাকনি ও লেজের মাঝখানের পালক ধূসর এবং ডানার ওড়ার প্রথম পালক কালচে, ঠোঁট কমলা থেকে কমলা-হলুদ ও চোখ বাদামি, পা ও পায়ের পাতা কালো এবং পায়ের তলা হলদে থাকে। প্রজননকাল ছাড়া এর কপাল সাদা ও ঠোঁট ফিকে হলদে-কমলা হয়। ছেলে ও মেয়েপাখির চেহারা অভিন্ন। অপ্রাপ্তবয়স্ক পাখির পিঠের দিক কিছুটা বাদামি-ধূসর, দেহের নিচের দিক সাদাটে, ডানার প্রান্ত-পালক কালচে, ডানায় কালচে ডোরা, কাঁধ-ঢাকনি, ডানা-ঢাকনি ও গোড়ার পালকে তিলা রয়েছে। ৩ টি উপপ্রজাতির মধ্যে S.b.bengalensis বাংলাদেশে রয়েছে।
স্বভাব- বাংলা টিকিপানচিল সাগর তীর, পোতাশ্রয়, জোয়ারীয় খাঁড়ি ও লবণ চাষের জমিতে বিচরণ করে,দলবদ্ধ পাখি ও সচরাচর বিচ্ছিন্ন দলে থাকে, প্রায়ই বাতাসি পানচিলের সাথে দেখা যায়। জলের সামান্য উপরে উড়ে ছোঁ মেরে এদের খাদ্য সংগ্রহ করতে দেখা যায়, খাদ্যতালিকায় প্রধানত রয়েছে মাছ ও চিংড়ি। দৃঢ় ভাবে ডানা নেড়ে উড়ে চলে এবং মাছারাঙ্গার মতই শূন্যে মুহূর্তের জন্য স্থির ভেসে থাকতে পারে, প্রায়ই গভীর সাগরে উড়ে যায়, জলে ঝাপ দেবার আগে সচরাচর ডাকে- ক্রীক- ক্রীক এবং ভয় পেলে উচ্চ শব্দে কিচমিচ করে ডাকে।
মালদ্বীপ ও পারস্য উপসাগরের চরে মে-জুন মাসে প্রজননকালে ছেলেপাখি মেয়েকে মাছ এনে উপহার দেয় এবং মাটিতে বাসা বানিয়ে ডিম পাড়ে। ডিম সংখ্যায় ১-২ টি।
বিস্তৃতি- বাংলা টিকিপানচিল বাংলাদেশের দুর্লভ আবাসিক পাখি। চট্টগ্রাম বিভাগের উপকূলে পাওয়া যায়। আফ্রিকা, মধ্যপ্রাচ্য, অস্ট্রেলিয়া ও ভারত উপমহাদেশসহ দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার এরা বিস্তৃত তবে নেপাল ও ভুটানে পাওয়া যায় না।
অবস্থা- বাংলা টিকিপানচিল বিশ্বে বিপদমুক্ত এবং বাংলাদেশে অপ্রতুল-তথ্য শ্রেণীতে রয়েছে। বাংলাদেশের বন্য প্রাণী আইনে এ প্রজাতি সংরক্ষিত।
Dr mohiuddin tareak