শকুন
critical endangered
বর্ণনা- বাংলা শকুন বিশাল, প্রশস্ত ডানা এবং কালচে দেহের অধিকারী পাখি (দৈর্ঘ্য ৯০ সেমি, ওজন ৪.৩ কেজি, ডানা ৫৫ সেমি, ঠোঁট ৭.৬ সেমি, পা ১১.৬ সেমি, লেজ ২২.৫ সেমি)। প্রাপ্তবয়স্ক পাখির মলিন গলাবন্ধ সাদা এবং দেহ কালচে-বাদামী, কোমর স্পষ্ট সাদা, পালকহীন মাথা ও ঘাড় কালচে ধূসর।
মাথার ওপর দিয়ে ওড়ার সময় সাদা গলাবন্ধ, কালচে দেহ এবং ডানার নিচের দিকের সাদা পালক- ঢাকনি ও ওড়ার-পালকের কালচে পাড়ের পার্থক্য দেখে চেনা যেতে পারে। চোখ হলদে-বাদামী কিংবা ফিকে বাদামী, কালচে হালকা খয়েরি অথবা সবুজ-হালকা খয়েরি, ঠোঁটের ঝিল্লি কালো, মাথা ও ঘাড়ের পালকহীন চামড়া কালচে হালকা খয়েরি, এবং পা ও পায়ের পাতা কালো। ছেলে ও মেয়ের চেহারা অভিন্ন। অপ্রাপ্তবয়স্ক পাখির কালচে বাদামি দেহ ও ডানার উপরে সূক্ষ সাদা ডোরা রয়েছে। কোমর কালচে ও ডানার পালকের নিচের ঢাকনিতে সরু সাদা টান রয়েছে।
স্বভাব- বাংলা শকুন বনের ধার, গ্রাম, ভাগাড় ও কসাইখানায় বিচরণ করে এবং এরা সবসময় দলবদ্ধ ভাবে থাকে। আহারের খোঁজে এরা আকাশে টহল দেয় অথবা উঁচু গাছ বা দালানে বসে থাকে। খাদ্যতালিকায় রয়েছে মৃত প্রাণী এবং পচা মাংস। খাবার দেখতে পেলে শো শো শব্দে দ্রুত নিচে নেমে আসে, এবং খাবার নিয়ে কাড়াকাড়ি করে ও কর্কশ গলার ঘড়ঘড়, হিসহিস কিংবা একটানা চিঁচিঁ চিৎকার করে।
সেপ্টেম্বর-মার্চ মাসে প্রজননকালে উঁচু গাছ বা দালানের ভগ্নাবশেষে ডালপালা দিয়ে মাচার মত বাসা বানায় এবং বছরের পর বছর একই বাসা ব্যবহার করে। এ বাসায় মেয়েপাখি একটি সাদা ডিম পাড়ে, ডিমের মাপ ৮.৬ x ৬.৪, ডিম ফুটতে ৪৫ দিন লাগে।
বিস্তৃতি- বাংলা শকুন বাংলাদেশের বিরল আবাসিক পাখি, সব বিভাগেই দেখা যায়। ভারত, পাকিস্তান, নেপাল, ভুটান, চীন, ইরান, আফগানিস্তান ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশসহ এশিয়ায় এদের বৈশ্বিক বিস্তৃতি রয়েছে।
অবস্থা- বাংলা শকুন বিশ্বের মহাবিপন্ন বলে পরিচিত। গবাদিপশুর চিকিৎসায় ডাইক্লোফেনিক ব্যবহারের ফলে বিগত শতকের সুলভ এই পাখির সংখ্যা ৯৮ % হ্রাস পেয়েছে। বাংলাদেশে এ প্রজাতিটি এখনও বিপদগ্রস্ত পাখির তালিকাভুক্ত করা হয় নি। বাংলাদেশের বন্যপ্রাণী আইনে এ প্রজাতি সংরক্ষিত।
বিবিধ- বাংলা শকুনের বৈজ্ঞানিক নামের অর্থ বাংলার শকুন! ( Gyps = শকুন, bengalensis= বাংলার)
Dr mohiuddin tareak