বাংলাদেশে পোষা পাখি পালন ইতিহাস বেশি দিনের নয়। তবে অনেকে বহু আগে থেকে শখের বসে পোষা পাখি পালন করে আসছিলেন। বিগত ১০ বছরে এই পোষা পালনে আসে এক আমুল পরিবর্তন। এখন শুধু শখ পূরণ নয় এই পোষা প্রাণি পালনের মাধ্যমে আসছে আর্থিক সচ্ছলতা এবং দারিদ্র বিমোচন।
বাংলাদেশে সবচেয়ে বহুল প্রচলিত এবং লাভজনক পাখি পালন হলো বাজেরিগার পালন। এই পাখির মূল আবাসস্থল ছিল অস্ট্রেলিয়া এবং তার পার্শ্ববর্তি এলাকা। ১৮০৫ সালে এটি ঘরোয়া পরিবেশে পালন শুরু হয়। এখন বিশ্বের সকল দেশে এই পাখির জনপ্রিয়তা প্রচুর। এই পাখিটি ঘড়োয়া পরিবেশে বেশ ভালভাবে লালন পালন করা যায়। এরা একসাথে ৫-৭ টি ডিম দেয়। পুরুষ এবং মেয়ে পাখি একসাথে বাচ্চা উৎপাদন করতে পারে। পাখি গুলা নরমালি চিনা, কাউন, তিশি, গুজি তিল, বাজরা, মিলেট সহ বিভিন্ন শস্য দানা খেয়ে থাকে। এদের প্রয়োজনীয় শক্তি পরিমাণ ১৫০ থেকে ২৩০ কিলোক্যালরি। এবং ১২ থেকে ১৬ ভাগ আমিষের প্রয়োজন হয়।
পাখিগুলো খুবই চঞল এবং দেখতে খুব সুন্দর। এদের প্রায় ৩২ থেকে ৩৫ টি ভ্যারাইটি রয়েছে। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে এখন বাজেরিগার পালন খুবই জনপ্রিয়। বাংলাদেশেও এখন পাখিটি অনেকে পালন করছে। বার্ড লাইফ এবং আইইউসিএন এর তথ্যমতে বিশ্বে প্রায় ১০০০ কোটি বাজেরিগার পাখি রয়েছে যার সিংহভাগ রয়েছে অস্ট্রেলিয়াতে। বাংলাদেশে এর কোন তথ্য না থাকলেও ধারণা করা হয় প্রায় ৫০ থেকে ৬০ লক্ষ বাজেরিগার পাখি পালন করা হচ্ছে।
একজোড়া পাখির মাসিক খরচ ২০০ থেকে ২৫০ টাকা। কেউ ১০ জোড়া পাখি পাললে তার মাসিক খরচ ২০০০ টাকার মত। যদি ঠিক মত ডিম ও বাচ্চা উৎপাদন হয় তা হলে ১০ জোড়া পাখি থেকে বছরে ১০০ থেকে ১২০ টি পাখি পাওয়া যাবে যার বাজার মূল্য প্রায় ৩০০০০ থেকে ৪০০০০ টাকা। মাসে ২০০০ হাজার টাকা করে লাভ পাওয়া যায়। যা একজন ছাত্রের খরচ মেটায়।
বর্তমানে পোষা পাখির সেক্টরে আনুমানিক ৫০০ থেকে ৮০০ কোটি টাকার ইন্ডাস্ট্রি তৈরি হয়েছে বাংলাদেশে। ইনশাল্লাহ আগামী ১০ বছরে ৫০০০ কোটি টাকা ছাড়িয়ে যাবে।
আমি এখানে আর্থিক বিষয়টা ধারনার জন্য উল্লেখ করলাম। বড় যে লাভ তা হলো পাখি পালনের মাধ্যমে মানুষের মানষিক বিকাশ লাভ, মাদক থেকে দুরে সরা, খারাপ কাজ থেকে দুরে থাকা যায়। যা টাকা দিয়ে পরিমাপ যোগ্য নয়।
তাই আসুন আমরা বাজেরিগার পালন করি। নিজে ভাল থাকি মানসিক ভাবে সুস্থ থাকি এবং নিজের আর্থিক উন্নয়ন করি।
“পোষা পাখি পালন করি, মাদকমুক্ত দেশ গড়ি”
করবো মোড়া বাজেরিগার পালন, হবো মোদের দারিদ্রবিমোচন, এটাই হোক ডিজিটাল বাংলা গড়ার মূল বচন”
বিঃদ্রঃ আর্থিক লাভ এবং বাচ্চা উৎপাদনের হিসাব একএকজন খামারির কাছে বিভিন্ন হবে।
ডাঃ মোঃ সাদ্দাম হোসেন
বার্ডস্ এন্ড পেট এনিম্যাল ক্লিনিক
ওয়ারলেস মোড়, খুলশী, চট্টগ্রাম।
মোবাইলঃ ০১৭০৮৫২৬৮৪৪