দুধ মাংস ডিমের চাহিদাঃ
দুধ মাংস ডিমের চাহিদা বিভিন্ন ভাবে নিরূপিত হয়।
১। পুষ্টি ভিত্তিক চাহিদা, ২। খাদ্যাভ্যাস ভিত্তিক চাহিদা, ৩। অর্থনৈতিক ভিত্তিক চাহিদা।
১। পুষ্টি ভিত্তিক চাহিদা: পুষ্টির চাহিদার ভিত্তিতে পুষ্টি বিজ্ঞানীগণ একজন পূর্ণ বয়স্ক সূস্থ্য সবল মানুষের জন্য সপ্তাহে ৮৪০ গ্রাম মাংস, ১৭৫০ মিলি দুধ এবং ২ টি ডিম খাওয়ার সুপারিশ করেছেন। (ডিএলএস) শিশু ও বৃদ্ধদের চাহিদা তুলনামুলকভাবে কম হবে। উল্লেখ্য স্বাস্থ্য রক্ষার প্রয়োজনে যেমন দুধ মাংস ডিম অপরিহায, আবার অতিরিক্ত গ্রহন স্বাস্থ্য ঝুঁকি বাড়ায়। আদিকাল থেকে কবিরাজগণ অধিকাংশ চিকিৎসায় রোগীদের মাংস ডিম খেতে নিষেধ করে আসছেন। এমন কি তাবিজ, মন্ত্রপাঠেও এই নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়ে থাকে। ইদানিং ডাক্তারগণ বিভিন্ন রোগের চিকিৎসায় মাংস দুধ ডিম খেতে অনুৎসাহিত করছেন। সমাজে একটি স্লোগান বেশ চাওড় হচ্ছে- “চল্লিশ উদ্ধে বয়সে দুধ মাংস ডিম এড়িয়ে চলুন, দীর্ঘজীবী হউন।”
২। খাদ্যাভ্যাস ভিত্তিক চাহিদাঃ হিন্দু সমাজে গো-মাংস খাওয়া নিষেধ, মুসলিম সমাজে শুকুর মাংস হারাম, বৌদ্ধ ধর্মে জীব হত্যা মহাপাপ জ্ঞানে সব ধরণের মাংস এড়িয়ে চলেন। সমাজে কিছু মানুষ আছেন নিরামিষভোজী, কিছু তান্ত্রিক সাধক আছেন যারা মাংস একেবারেই স্পর্শ করেন না। দুধ মাংস ডিমের চাহিদা নিরূপনে সামাজিক প্রথা ও খাদ্যাভাস বিবেচনা করতে হবে।
৩। অর্থনৈতিক ভিত্তিক চাহিদাঃ বাংলাদেশ একটি নিম্ন মধ্যম আয়ের দেশ। এখানে অধিকাংশ মানুষ আর্থিক অভাবে প্রয়োজনীয় দুধ মাংস ডিম কিনে খেতে পারে না। আর্থিক সংজ্ঞানুসারে বাজার অর্থনীতিতে পণ্যের মূল্য পণ্যের উৎপাদন খরচের উপর নির্ভর করে না বরং চাহিদা ও সরবরাহের উপর নির্ভর করে। চাহিদার তুলনায় সরবরাহ বৃদ্ধি পেলে পণ্যের মূল্য কমে যায় এবং সরবরাহ কমে গেলে মূল্য বৃদ্ধি পায়।অনুসিদ্ধান্ত রূপে বলা যায় পণ্যের বাজার মূল্য যখন উৎপাদন খরচের সমান হয় তখন চাহিদা ও সরবরাহ সমান হয়। পণ্যের বাজার মূল্য উৎপাদন খরচের চেয়ে কম হওয়া মানে চাহিদার তুলনায় সরবরাহ বেশি হওয়া।
Dr Bayazid Bahalul