Breaking News
ডিম পরীক্ষা
ডিম পরীক্ষা

ইনকিউবেটরে ডিম দেবার আগে ও পরে ডিম পরীক্ষা

ইনকিউবেটরে ডিম দেবার আগে সেই ডিমে ভ্রুন আছে কিনা সেটা নিখুঁত ভাবে পরিক্ষা করার তেমন কোনো উপায় নেই বললেই চলে,
তবে এটাও মনে রাখতে হবে ডিমে ভ্রুন থাকলেই ডিম ফুটবে না, সেই ডিমকে যত্ন নিতে হবে তবেই সেই ডিম ফুটবে বা ভালো ফল আসবে।
কিন্তু যত্ন টা সঠিক হচ্ছে কিনা সেটাই হচ্ছে ইনকিউবেটরের ডিম পরিক্ষা করার মুল উদ্দেশ্য।

মূলত ডিম পরিক্ষার মাধ্যমে এটা পরিক্ষা করা হয় যে ইনকিবেটর সঠিক ভাবে কাজ করছে কিনা।
ইনকিউবেটরে ডিম দেবার আগে যে পরিক্ষা টা করাহয় সেটা হচ্ছে ডিম সংরক্ষন সঠিক ছিলো কিনা সেই পরিক্ষা।

সাধারণত ২১ডিগ্রী সেলসিয়াসের উপরে তাপমাত্রা উঠলে ভ্রুন বাড়তে শুরু করে,কিন্তু ভ্রুনের সঠিক মাত্রায় বৃদ্ধি হয় ৩৭.৭ডিগ্রি সেঃ তাপমাত্রায়,

তাই  দীর্ঘ সময় যদি পর্যাপ্ত তাপমাত্রার  এর নিচে ভ্রুনের বৃদ্ধি হতে থাকে তবে পরবর্তীতে সেই ভ্রুনের মৃত্যু হবে এবং ডিম নষ্ট হয়ে যাবে।
কিন্তু আমাদের দেশে শীতকাল ছাড়া বেশিরভাগ সময় তাপমাত্রা ২১ডিগ্রী সেঃ এর উপরে থাকে,

তাই গরম কালে স্বাভাবিকভাবে ডিম একটু বেশি দিন ঘরে রাখলেই নষ্ট হয়ে যায়, সেই জন্য ফ্রিজের নরমালে ডিম সংরক্ষন করা উঠিত।
ডিম নষ্ট হতে থাকলে সাধারনত ডিমের ভিতর হাইড্রোজেন সালফার গ্যস তৈরি হতে থাকে, গ্যস পানির চেয়ে ওজনে হালকা তাই সংরক্ষিত ডিমে গ্যস আছে কি নেই সেটা পরিক্ষার একটা সাধারন উপায় হচ্ছে ডিম পানির মধ্য রেখে দেখা যদি ডিমে গ্যস থাকে বা নষ্ট হয় তবে সেই ডিম পানিতে ভাসবে বা পানির মধ্যে দ্বাড়িয়ে থাকবে,

এই পরিক্ষা টি উর্বর ডিমের ক্ষেত্রে ঝুঁকিপূর্ণ তাই আমি এই পরিক্ষা সমর্থন করি না, কারন পানিতে ডিম দিয়ে পরিক্ষা করার আগে একটি বিষয় লক্ষ রাখতে হবে ডিমটি ২২ডিগ্রী তাপমাত্রার নিচের তাপে সংরক্ষণ করা ছিলো কিনা।

অর্থাৎ ফ্রিজ থেকে বের করা ডিমে এই পরিক্ষা করা যাবে তবে ইনকিউবেটরের ডিমে এই পরিক্ষা  করা ঠিক না।
তাই শুধু মাত্র খাবার জন্য যে ডিম গুলো রাখবেন সেই ডিম গুলো পানিতে ডুবিয়ে পরিক্ষা করা যাবে, ইনকিউবেটরের ডিমে এই পরিক্ষা নয়।
একটা কথা প্রচলিত আছে ডিমের আকার দেখে ডিমের ভিতরের মোরগ – মুরগী নির্ণয় করা.! এখনে প্রথমে জানতে হবে ডিমের ভিতর বাচ্চার প্রথম অবস্থা আসলে কি.!

ডিমের ভিতরে বাচ্চার প্রথম অবস্থা হচ্ছে শুক্রানু বা ভ্রুন, এই ভ্রুন প্রথমে অনেক সুক্ষ থাকে সেই সুক্ষ ভ্রুনের কোনো প্রভাব ডিমের আকারের উপর পড়ার কোনো মজবুত বৈজ্ঞানিক ভিত্তি নেই, অথবা ডিমের খোসার আকারের কোনো প্রভাব সুক্ষ ভ্রুনের উপর পড়ার সম্ভবনা নেই।

তাই সব সাইজের ডিম থেকেই সব রকম বাচ্চা হবে এটাই স্বাভাবিক। এটা পরিক্ষার জন্যএক মুরগীর দশটি এক সাইজের ডিম মুরগী দিয়ে ফুটান দেখবেন মুরগ -মুরগী দুই রকম বাচ্চাই জন্ম নেবে।
ঠান্ডা স্থানে ডিম সংরক্ষনের সময় ডিমের চিকন মাথা নিচে রাখবেন,তবে সেই ডিম অন্যডিম অপেক্ষা একটু বেশিদন ভালো থাকবে।
ইনকিউবেটরে ডিম দেবার পরে সঠিক তাপমাত্রা ,সঠিক আদ্রতা এবং সঠিক সময় ডিম  ঘুরানোর পাশাপাশি ডিম গুলোকে পরিক্ষা করাটাও জরুরী

কারন ডিম নষ্ট হলে সেই ডিমে ব্যক্টেরিয়া জন্ম নেবে সেই ব্যক্টেরিয়া বাতাসের সাথে মিশে গিয়ে অন্য ডিমের ছিদ্র দিয়ে প্রবেশ করে সুস্থ ভ্রুনকেও আক্রন্ত করতে পারে যার ফলে সেই ভ্রুনও মারা যাবে।
তাই ডিম পরিক্ষা করে নষ্ট ডিম গুলো ইনকিউবেটরের ভিতর থেকে বের করে দিতে হবে।
আলো দিয়ে খুব সহজে ডিম পরিক্ষা যায় ডিমের একপিষ্ঠে আলো এবং অন্য পিষ্ঠে অন্ধকার রেখে অন্ধকার দিকে ডিমের ভিতর দিয়ে আলো ভেদ করালে, ডিমের ভিতরের অবস্থা প্রথম দিকে স্পষ্ট হাবে দেখা যায়।
একটা টর্চ লাইট দিয়ে অন্ধকার ঘরে এটা খুব সহজে পরিক্ষা করা যায়।

সাধানত সপ্তম দিনে ডিম গুলো লাইট দিয়ে পরিক্ষা করলে যে ডিম গুলোতে রক্তের শিরা মাকর্সার জালের মত দেখাযাবে সেগুলোই হচ্ছে ফুটার উপযুক্ত ডিম।
তার পরে ধীরে ধীরে ডিমের ভিতরের কালো স্পট টা বড় হতে থাকে এবং নড় চড়াও করতে থাকে।
(১নং ছবিতে লক্ষ করুন)

তবে ইনকিউবেটরে ভ্রুনটা এমনিতে বেড়ে ওঠে না ভ্রুন বড় হবার পিছনে রয়েছে যত্ন সেই যত্ন টা নিতে হয় ইনকিউবেটর চালককে, যদি কোনো রকম যত্নের ত্রুটি হয় তবে সেই ভ্রুনের মৃত্যুর ঝুঁকি বেড়ে যায়, এবং ভ্রুন মারা যায়।
ভ্রুনের মৃত্যু হলে সেই ডিম ভিতরের ভ্রুন পঁচে যায় এবং সেই ডিম, লাইট দিয়ে পরিক্ষা করলে ডিম ভিতরের ভ্রুনের শীরের অংশ গুলো খন্ড খন্ড কালো স্পটের মত দেখা যায়।
(২নং ছবিতে লক্ষ করুন ছবিটা সংগ্রহিত)

সেই নষ্ট ডিম ফেলে দিয়ে আবার সঠিক ভাবে বাকি ডিম গুলোর যত্ন নিতে হবে, তাপমাত্রা ঠিক রাখার পরেও একটা বড় সমস্যা ভ্রুনের মৃত্যুর কারন হয় সেটা হচ্ছে বাতাসের  আর্দ্রতা

আর্দ্রতা  ঠিক রাখার প্রধান উদ্দেশ্য হচ্ছে ডিমের তরলকে সময় মত সঠিক পরিমানে শুকানো,
ডিমে লাইট ধরলে ডিমের ভিতর কতটুকু শুকিয়েছে সেটা বুঝা যায়।

৭দিন ১৪দিন ১৮দিন কত টুকু শুকানো সঠিক এবং কত টুকু শুকানো বিপদজনক
(৩নং ছবিতে লক্ষ করুন)
প্রথম থেকে ডিম ক্যান্ডালিং করে ভুল ভ্রুন্তি গুলো সংশধনের চেষ্টা করে ইনকিউবেটরকে সঠিক ভাবে চালালে, ডিম ফুটার হার অনেক বেশি হবে।

লেখকঃআব্দুল ওহাব
Please follow and like us:

About admin

Check Also

হ্যাচারী

হ্যাচারীতে হ্যাচিং বাচ্চা্য় কি কি ত্রুটি হয়,কারণ এবং সমাধান

হ্যাচারীতে হ্যাচিং বাচ্চা্য় কি কি ত্রুটি হয়,কারণ এবং সমাধান ১।ভ্রূণ  মারা যাওয়া কারণ প্যারেন্টে সুষম …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Translate »